ঈদের বোনাস কোন হাতে পেলেন কার হাতে দিলেন!

ঈদের বোনাস কোন হাতে পেলেন কার হাতে দিলেন!

বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। দেশটির সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা আসে তৈরী পোশাক শিল্প থেকে। দেশটির  উল্লেখযোগ্য কর্মজীবী মানুষ এই শিল্পের সাথে জড়িত। যেখানে একটা বৃহত অংশ নারী। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্প কারখানা রাজধানী ঢাকা ( গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ) এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে। শিল্প কারখানা গুলি সাধারণত বছরের ২টি ঈদ মৌসুমে সপ্তাহব্যাপী ছুটি ঘোষণা করে। সেজন্য এসব শিল্প কারখানার কর্মজীবী মানুষ গুলি অন্য সময়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ না পেলেও ঈদের ছুটিতে শত বাধা উপেক্ষা করে হলেও গ্রামের বাড়িতে যাবেই। আর এই সুযোগ বুঝেই সারাদেশে পরিবহন সিন্ডিকেট এই দেশের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কষ্টের টাকা গুলি খুব সহজেই পুর্ব নির্ধারিত ভাড়া বাড়িয়ে তাদের ইচ্ছেমতো হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব অন্যায় অবিচার সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যাক্তি এবং প্রতিষ্ঠান দেখেও সবাই নির্বিকার। সমাজের ২/১ জন সচেতন মানুষ পুলিশের জুরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ ফোন করে অথবা ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ঘটনার তুলনায় অভিযোগ খুবই কম। আর অভিযোগের প্রতিকার আরও কম। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং কর্তাব্যক্তিরা এসব জুলুম অন্যায় অথবা বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধ না করলে অনাগত ভবিষ্যতে এসব অন্যায়ের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। রাজধানী ঢাকা থেকে কোন জেলার পূর্ব নির্ধারিত ভাড়া যদি অন্য সময়ে ৫০০ টাকা হয় ( সেটাও পরিবহন মালিকের দড় কসাকসি করেই নির্ধারিত) এই ঈদ মৌসুমে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৯০০/১০০০/১১০০/১২০০ টাকা। এবং কোথাও কোথাও দ্বিগুণ থেকেও বেশি। এবং জেলা শহর থেকে উপজেলা বা ইউনিয়ন লেভেলে অটোরিকশা / ইজিবাইকের ভাড়া ১০০ টাকার স্থলে স্থান ভেদে ২০০/২৫০/৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। অর্থাৎ সুযোগ বুঝে দ্বিগুণ / তিনগুণ ভাড়া হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেকেই পরামর্শ দেবেন দুদক / পুলিশ / ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দিতে। কিন্তু বাস্তবতা হলো একটা কর্মজীবী পরিবার বছর শেষে ঈদে বাড়ি ফিরবে নাকি সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় অভিযোগ দিবে? রাষ্ট্রীয় ভাবে এসব জুলুম অন্যায়ের লাগাম টেনে ধরতে না পাড়লে নিকট ভবিষ্যতে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। শিল্প কারখানার কর্মজীবী একজন মানুষ যদি ৬০০০/ টাকা বোনাস পান তিনি যদি তার পরিবারের ৩ জন সদস্য নিয়ে এই ঈদ মৌসুমে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া আসা করেন তাহলে তার বোনাস দিয়ে সংকুলান হবে না। অথচ এই বোনাস কি শুধু পরিবহন ভাড়ার জন্য দেওয়া হয়েছে? যে ঈদ বোনাসের টাকা দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের নতুন জামা কাপড় পড়ে এক বেলা ভালো খাবারের কথা ছিল সেই ঈদের বোনাস যাচ্ছে মুনাফাখোর দের পকেটে। এসব দ্বায় কি কেও এড়াতে পারবে? কেও হয়তো মনেই করবে না। ঈদ আসবে ঈদ যাবে কিন্তু ঐ শ্রমজীবী মানুষের ঘামের কষ্টার্জিত ঈদের বোনাসের টাকা তাকে ভোগ করতে দিবেনা। এভাবেই চলবে……….

প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ ( কাওছার)
মেম্বার, আই ই বি ৪০৫৫৭.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend