ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ইউপি ভবন, অরক্ষিত ৪১ শহীদের গণকবর

Union-Office-1জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন মোল্লার স্বেচ্ছাচারিতা আর একগুয়েমির কারনে অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ইউপি ভবন। ব্যহৃত হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার মানুষের ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রিক সেবাকর্ম। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ১১নং আবাইপুর ইউপি ভবনটি এখন জুয়াড়ী ও মাদকসেবীদের দখলে, লুটপাট চলছে মূল্যবান সামগ্রি, অরতি হয়ে পড়েছে পরিষদ চত্ত্বরে থাকা আলফাপুর যুদ্ধে নিহত ৪১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গণকবর। সরেজমিন আর তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ১১নং আবাইপুর ইউনিয়নের নিজস্ব পরিষদে সার্বিক কার্যক্রম চলে আসছিল। ২০০৬ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবন উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে নিয়মিত কার্যক্রম চলছিল এ পরিষদ ভবনে। বর্তমান চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন মোল্লা নির্বাচিত হওয়ার পর শপথ গ্রহনের ১ মাস পার হতে না হতেই ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম হাটফাজিলপুর বাজারের একটি মার্কেটে স্থানান্তর করেন। এখানে চেয়ারম্যানের রাজনীতি চর্চার পাশাপাশি পরিষদ কেন্দ্রিক দাপ্তরিক কর্মকান্ড শুরু করেন। ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিনের অভিযোগ, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার ১ বছর পর থেকেই আমজাদ হোসেন মোল্লা তার ব্যক্তিগত ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যবসা চালানোর প্রয়োজনে কৌশলে পরিষদের দাপ্তরিক সকল কার্যক্রম হাটফাজিলপুর বাজারে নিয়ে এসেছেন। মহিলা ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম জানান, চেয়ারম্যান নিজ মতাবলে এলাকার জনসেবা ব্যহত করে হাটফাজিলপুর বাজারে অবৈধভাবে পরিষদ চালাচ্ছেন। গাংগুটিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, আবাইপুর বাজারটি ইউনিয়নের মধ্যস্থলে অবস্থিত হওয়ায় আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের জনসেবামূলক কর্মকান্ড পরিষদ কেন্দ্রিক হলে সবার জন্য সুবিধা হতো।Union-Officeতিনি জানান, সরকারি নিয়ম কানুন থোরাই কেয়ার করে চেয়ারম্যান নিজ মতার অপব্যবহার করায় অব্যবহৃত কোটি টাকার ভবনটি এখন জুয়াড়ী ও মাদকসেবীদের দখলে, লুটপাট চলছে মূল্যবান সামগ্রি, অরতি হয়ে পড়েছে পরিষদ চত্ত্বরে থাকা আলফাপুর যুদ্ধে নিহত ৪১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গণকবর। জনৈক নাজিম মিয়া বলেন, জরুরী প্রয়োজনে চেয়ারম্যানকে ঠিকমত পাওয়া যায়না, তিনি হাটফাজিলপুর বাজার কেন্দ্রিক ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত থাকেন। ভিজিএফ, ভিজিডিসহ বিভিন্ন সরকারি অনুদান চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গোডাউনে রেখে সুবিধামহ বিলি বন্টন করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কৃপালপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আনোয়ার খাঁ, হাটফাজিলপুরের ইকবাল হোসেন, যুগনীর বিল্লাল মুন্সি, মীনগ্রামের রঞ্জু মিয়া, পাঁপাখিয়ার রাবেয়া বেগম ও লণদিয়া গ্রামের আলেয়া খাতুন জানান, তারা সম্বিলিতভাবে উর্ধতন কর্তৃপরে নিকট চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ দিলেও অদৃশ্য কারনে কোন লাভ হয়নি। আজ অবধি আলোর মুখ দেখেনি ইউপি সদস্যদের বহু অভিযোগ। লনদিয়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান মোহাম্মাদ আলী জানান, অযন্ত-অবহেলা পড়ে থাকা ৪১ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গণকবরটির এখন বেহালদশা সংস্কার আর রনাবেন নাই। পরিষদ চত্বরে অবৈধভাবে দোকানঘর তুলে দিয়ে জায়গা দখল করছেন চেয়ারম্যান সমর্থিত দোকানদার বাহারুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, পাহাড়াদার না থাকায় পরিষদের ভিতরে থাকা বহুমুল্যবান সম্পদ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ব্যাপারে ১১নং আবাইপুর ইউনিয়নের সচিব রুহুল আমিন জানান, তিনি নতুন এসেছেন পূর্বের কোন সিন্ধান্তের কথা বলতে পারবেন না তবে, আবাইপুর কোটি টাকার ইউপি ভবনটি ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যন আমজাদ হোসেন মোল্লা জানান, আবাইপুর পরিষদে ইন্টারনেট চালানোর জন্য সুবিধামত লাইন পাওয়া যায়না, তাছাড়া একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে জনবহুল হাটাবাজার এলাকায় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অরতি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট এবং দোকান বসিয়ে পরিষদের জায়গা দখলের কথা এড়িয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার বলেন, অব্যহৃত আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend