‘চলতি মাসেই’ ছাত্রলীগের সম্মেলন

awaচলতি মাসেই ছাত্রলীগের সম্মেলন হতে পারে। তারিখ ঘোষণার ব্যাপারে এ সপ্তাহেই ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানা গেছে। দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুতির বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, ‘আমরা সম্মেলনের বিষয়ে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়ে দেব। এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। সংগঠনের ভবিষ্যত চিন্তা করেই আমরা সম্মেলনের ব্যবস্থা করছি।’
ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাত্রনেতা জানান, আওয়ামী লীগের অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের চেয়ে দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ অনেক লোভনীয়। তাই সহজে কেউ এ পদ ছাড়তে চান না। তবে প্রধানমন্ত্রীর কয়েক দফা নির্দেশের পর বাধ্য হয়েই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। মে মাসের যে কোনো দিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলনের মধ্যদিয়ে ছাত্রলীগের আনুষ্ঠানিক সম্মেলনের দুয়ার খুলবে।
ছাত্রলীগ নেতারা জানান, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কালক্ষেপণের অনেক চেষ্টা করেছেন। সম্মেলন টেনে জুলাই মাসেও নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রোজার আগেই সম্মেলনের তারিখ চেয়েছেন।
ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা জানান, কালক্ষেপণের অর্থই হলো জ্যেষ্ঠ কিছু নেতার বয়স শেষ করা। কারণ বয়স ২৯-এর কোঠা পেরোলেই ছাত্রলীগের পদ পাওয়া যায় না। এ ছাড়া পদ আকড়ে ধরে রাখতে এর আগেও ছাত্রলীগের কয়েক কমিটির নেতারা এমন কালক্ষেপণ করেছিল। অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। এমন পরিস্থিতি দেখে এর আগে একটি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণাও করেছিলেন তৎকালীন সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা।
জানা যায়, ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগকে দুইবার ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমকে একবার সম্মেলনের তাগাদা দেওয়ার পরও কালক্ষেপণের অভিযোগ ছিল। সর্বশেষ এক বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় নাজমুলের ওপর ক্ষুব্ধ হন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওর এত বড় দুঃসাহস হয় কীভাবে? আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়।’
জানা গেছে, ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ নতুন সম্মেলন দিয়ে বিদায় নেওয়ার জন্য অনেকটা প্রস্তুত। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক চাচ্ছেন কালক্ষেপণ করতে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের কথা শুনে এখন তড়িঘড়ি করে সম্মেলন করতে চাচ্ছেন।
এর আগে গত ২৬ মার্চ সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে সম্মেলনের নির্দেশ আসে। ওই দিন নাজমুল আলমকে দ্রুত সম্মেলন দেওয়ার তাগাদা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কয়েকটি জেলায় সম্মেলনের তারিখ জানানোর জন্য গণভবনে গেলে প্রধানমন্ত্রী সংগঠনের সভাপতি বদিউজ্জামানকে সম্মেলন করার তাগিদ দেন। এরপর বাংলা নববর্ষের দিন বদিউজ্জামানকে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সামনেই তৃতীয় দফায় সম্মেলনের তাগাদা দেন তিনি।
গণভবনে সম্মেলনের কথা জিজ্ঞেস করলে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, সিটি নির্বাচনের পরই সম্মেলন করা হবে। এমন কথা সংগঠনটির দুই শীর্ষ নেতা গণমাধ্যমেও বলেছেন।
এর আগে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। দুই বছরের কমিটি আগামী জুলাইয়ে চার বছর পার করবে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়েই সম্মেলনের তাগাদা দিয়েছেন।
সম্মেলন ঘিরে এখন নেতারা ব্যস্ত বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে। পদ প্রত্যাশীরা এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, পিয়ারু, হাকিম চত্বর, মিলন চত্বর, টিএসসিতে দিনরাত চলছে সম্মেলনী আড্ডা। যারা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ থেকে দূরে বা নিস্ক্রিয় ছিলেন তারাও এখন সক্রিয় হচ্ছেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend