ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ বিজয়ের মাইল ফলক

Jhinadhoজাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ২৫ মার্চ রাতে যশোর সেনা নিবাস থেকে পাক বাহিনী কুষ্টিয়া শহরে ঢুকে মোহিনী মিল, পুলিশ লাইন ও জিলা স্কুলে অবস্থান নেয়। চুয়াডাঙ্গায় দণি পশ্চিম রনাঙ্গনের হেড কোয়ার্টার করে কুষ্টিয়ার পাক সেনাদের আক্রমণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ইপিআরের বাঙ্গালি সেনারা মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নের্তৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার পুলিশ, আনসার ও ছাত্র জনতাকে একত্রিত করে ৩০ মার্চ সকালে পাক সেনাদের অবস্থানগুলোর উপর আক্রমণ করা হয়। প্রথম আক্রমণে মোহিনী মিলের সেনা ঘাঁটির পতন হয়। হতাহতের পর পাক সেনারা জিলা স্কুলে চলে আসে। তুমুল যুদ্ধ চলতে থাকে। দুপুরের পর পুলিশ লাইন পাক ঘাঁটির পতন ঘটে। তাদের মাঝে আতংক সৃষ্টির জন্য খড় ও পাটখড়ি জড়ো করে চারিদিকে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। যশোর সেনা নিবাসে পালিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজতে থাকে। রাত ৮টার দিকে তারা যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জে কুমার নদীর ব্রিজের দু’পাশে গভীর খাদ কেটে তার উপর চাটাই বিছিয়ে আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে নকল রাস্তা তৈরি করে ফাঁদ পাতা হয়। রাত ৯টার দিকে পাক সেনাদের বহনকারী গাড়িগুলোর সামনের জীপ খাদে পড়ে। অন্য গাড়িগুলো রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যায়। তারা কামানের ২টি গোলা বর্ষণ করে। চারিদিক থেকে জয়বাংলা শ্লোগানসহ তাদের উপর আক্রমণ চলতে থাকে। পাক সেনারা আশপাশের বন জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ে। লে. আতাউল্লাহ খান আহত অবস্থায় ধরা পড়ে। একজন পাক সেনাও যশোরে ফিরে যেতে পারে না। পাক সেনাদের ৩৫টি গাড়ি ও অন্ত্র গোলা বারুদ মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। এ যুদ্ধ জয়ের খবর ভারতীয় ও বিদেশি প্রচার মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচার পায়। গাড়াগঞ্জের ব্রিজটি বিজয়ের ইতিহাসের সাী হয়ে আছে। উল্খ্যে৭১’ এর ৩১ মার্চ ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ জয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিজয়ের মাইল ফলক হয়ে আছে। তারপরেও ঝিনাইদহের গাড়াগঞ্জে আজও কোন বিজয় স্তম্ভ তৈরি হয়নি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend