মান্নার সঙ্গে সেনাবাহিনী নিয়ে কে কথা বলেছিলেন?

MannaGraphicsনাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে এক অজ্ঞাত প্রবাসী টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। আর তাতে সামরিক বাহিনীকে উস্কানি দেয়ার অভিযোগের মামলায় মান্নাকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সেই অজ্ঞাত প্রবাসীকে এখনো চিহ্নিত বা সনাক্ত করতে পারেননি গোয়েন্দারা। আর দ্বিতীয় মামলাটি হল বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে।

সেই অজ্ঞাত প্রবাসীর কোন খোঁজ এখনো পায়নি মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ। ১০ দিনের রিমান্ডে মান্নার কাছ থেকেও কোন তথ্য আদায় করতে পারেননি গোয়েন্দারা। মান্না বার বার একই কথা বলছেন,‘ প্রবাস থেকে কে ফোন করেছিল আমি জানি না। কেন ফোন করেছে তাও জানি না। তাকে আমি চিনি না। সে নিজেই সামরিক বাহিনীর কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা বলেছে। নিজেই নানা প্রস্তাব দিয়েছে। আমি কিছু বলিনি।’

মহাগর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন,‘ আমরা চেষ্টা করছি অজ্ঞাত প্রবাসীকে চিহ্নিত করতে। তবে এখনো পারিনি। আর মান্না সাহেবও আমাদের এখনো এনিয়ে কোন তথ্য দেননি।’

এদিকে মান্নার সঙ্গে ফোনালাপকারী সেই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আটকের খবর ছাঁপা হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে পাঁচদিন আগে। খবরে বলা হয়েছে সেই ব্যক্তি হলেন মশিউর রহমান মামুন নামে একজন ব্যাসায়ী। তাঁর ছবিও ছাাপা হয়েছে। তাকে ঢাকা থেকে আটক করা হয় বলে খবরে প্রকাশ। এনিয়ে মনিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আমরা এই নামে কাউকে আটক করিনি। এই মামলায় মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়া আর কেউ আটক বা গ্রেপ্তার নেই।’

মান্না-খোকা ভাইবার কথোপকথন প্রকাশ হওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে মান্নাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে গুলশান থেকে আটক করা হয়। সেনাবাহিনীকে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ফেব্রুয়ারি মান্নার বিরুদ্ধে মামলা হয় গুলশান থানায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড চলাকালে বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে খোকার সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, যাতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকেও আসামি করা হয়। আগের মামলার রিমান্ড শেষে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আবার ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

আদালতে দেয়া গুলশানের দায়ের করা প্রথম মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২২ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টার আগে যেকোন সময় মাহমুদুর রহমান মান্না তাঁর গুলশানের বাসা থেকে ভাইবারের মাধ্যমে অজ্ঞাক এক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। মান্না ওই কথোপকথনে সেনাবাহিনীর সাবেক এবং বর্তমান সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ দেখান। জবাবে অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তি বলেন,‘আপনাকে জিওসি লেভেল থেকে কল করাব, না আরেকটু সিনিয়র।’ জবাবে মান্না বলেন,‘জুনিয়র-সিনিয়র তো একটা ব্যাপার আছে, তার চাইতে বড় কথা হল ইফেকটিভ যারা। এ্যান্ড হু আন্ডারস্ট্যান্ড হু নোজ, এরকম হলে ভাল। মানে যার সাথে শেয়ার করা যাবে। যিনি আমাকে এনলাইটেন করতে পারবেন। মে বি আমিও তাকে বুঝতে পারব, বুঝাতে পারব।’

অজ্ঞাতনামা প্রবাসী বিগত ওয়ান ইলেভেনের ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল বলে প্রকাশ করে। মাহমুদুর রহমামন মান্না সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করলে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার (মান্না) সঙ্গে সেনাবাহিনীর সাবেক এবং বর্তমান লে. জেনারেলসহ এমনকি সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করছেন বলে জানায়। অজ্ঞাতনামা প্রবাসী সেনাবাহিনীর ১৯ জন সিনিয়র কর্মকর্তার মধ্যে ১২ জনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সম্পর্কের কথা জানায়। সে মান্নাকে বলে,‘ ইউ উইল রিসিভ এ কল বাই টুমরো টুয়েলভ।’

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই কথোকথনে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে উস্কে দিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হয়।’

যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন,‘ আমরা অজ্ঞাত প্রবাসীকে চিহ্নিত করতে তথ্য প্রযুক্তিও ব্যবহার করছি। আশা করি তাকে চিহ্নিত করতে পারব।’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend