৭ বছর বয়সী শিশুর সর্বনাশ…

rapeএকই এলাকার ছেলে হাফিজুলের কারণে সাত বছর বয়সী মেয়েটির জীবনে নেমে এসেছে নিষ্ঠুর বাস্তবতা আর কালো মেঘের ঘনঘটা। এ বয়সেই পৃথিবীর যে বীভৎস রূপ সে দেখেছে, তা বাকি জীবনে ভুলতে পারবে না।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার মেয়েটির মা নকশাদার থ্রিপিসে পাথর লাগানোর কাজ করেন। বাবা কৃষিজীবী। দুই ভাইয়ের ছোট বোন মেয়েটি দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। ১ মার্চ বিকেলে সাড়ে পাঁচটায় মেয়েকে ভাত খেতে দিয়ে মা বাইরে গিয়েছিলেন। ঘরে একা থাকার সুযোগে একই এলাকার হাফিজুল ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে।

মেয়েটির মা বলেন, ‘ফিরে এসে দেখি হাফিজুল ঘর থেকে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখনো বুঝতে পারিনি কী সর্বনাশ ঘটে গেছে আমার শিশুসন্তানের জীবনে।’

শিশুটিকে তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ে যাওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সেখানে ভর্তি না করে নগরের একটি হাসপাতালে পাঠান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটি অপরিচিত মানুষ দেখলেই আঁতকে ওঠে। খাওয়ার রুচি চলে গেছে। বিছানায় উঠে বসারও শক্তি নেই। বাথরুমে নিয়ে যেতে হয় কোলে তুলে। সারা দিন কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেডে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে শিশুটি। বেডে পায়ের কাছে বসা তার অসহায় মা, ছোট ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডই রোগীতে পূর্ণ। রোগীদের সঙ্গে আছে তাদের স্বজনেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সহানুভূতির কারণে শিশুটির সঙ্গে তার মাকেও খাবার দিচ্ছে। কিন্তু শিশুটি অপরিচিত মানুষ দেখলেই ভয়ে কুঁকড়ে ওঠে। খেতে না পারায় শিশুটি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এমনকি বিছানায় উঠে বসারও শক্তি নেই তার।

হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, শিশুটিকে খুবই সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। গত এক সপ্তাহে চিকিৎসায় শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।

ধর্ষণের ঘটনার পরদিন শিশুটির মা বাদী হয়ে হাফিজুলকে আসামি করে আড়াইহাজার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ এখনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার উপপরির্দশক (এসআই) জানান, আসামি হাফিজুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend