এ এক অন্য তামিম

ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হিসেবে হাজির হলেন তামিম।
ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হিসেবে হাজির হলেন তামিম।

তামিম ইকবালের ব্যাটিংয়ের কথা বললেই ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচটার স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে মুহূর্তেই। ডাউন দ্য উইকেটে জহির খান-অজিত আগারকারদের যেভাবে উড়িয়ে মেরেছিলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের সে দৃশ্য ভোলার নয়! কেবল ওয়ানডে নয়, টেস্টেও তামিমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তামিম মানেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রতিচ্ছবি—এমন ধারণা যেখানে পোক্ত; সেই তামিমকে আজ শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দেখা গেল ভিন্নরূপে!
প্রথম দিন শেষে ২৫০ বল খেলে এ বাঁহাতি ওপেনার অপরাজিত ৭৪ রানে। টেষ্ট ক্যারিয়ারের তামিমের এটাই সবচেয়ে বেশি বল খেলা ইনিংস। স্ট্রাইকরেট ২৯.৬০! ১০০ বলের ওপর খেলেছেন এমন টেস্ট হিসাবে আনলে এটাই তামিমের সর্বনিম্ন স্ট্রাইক রেট। টেস্টে ২০০-এর বেশি বল খেলেছেন এমন ম্যাচের সংখ্যা এর আগে তামিমের ছিল মাত্র দুটি। প্রথমটি ২০০৯ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে ২৪৩ বলে করেছিলেন ১২৮ রান। দ্বিতীয়টি গত বছর অক্টোবরে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৮ বলে খেলেছিলেন ৭০ রানের ইনিংস। এমন মন্থর ইনিংসের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে একপ্রকার রেগেই উঠেছিলেন বাঁ–হাতি ওপেনার। বলেছিলেন, ‘যদি মেরে খেলি, সবাই বলে মেরে খেলি। আবার ধীরে ব্যাটিং করলে সবাই বলে ধীরে ব্যাটিং করি। আমি আসলে করবটা কী?…লেট মি প্লে মাই গেম প্লিজ।’
এক বছরের ব্যবধানে মারকুটে তামিমের আবারও সেই রূপ। হয়তো দলের প্রয়োজনেই এ রূপ-বদল। আজকের ম্যাচের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তো দূরে থাক, একটা ফিফটিও ছিল না তামিমের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের চার ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ৪৯।

ফলে ব্রেন্ডন টেইলরের দলের বিপক্ষে ভালো কিছু করার তাগিদে ধীরলয়ে এগোনোই শ্রেয় মনে করেছেন তামিম।
তামিমের চারটি টেস্ট সেঞ্চুরির তিনটিই এসেছে যথাক্রমে ১০১, ৯৪ ও ১০০ বল খেলে । ২০০৯-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন ২০৫ বল খেলে। এরপর ২০১০-এ ভারতের বিপক্ষে ১০১ বলে করেছিলেন সেঞ্চুরি। ওই একই বছরে লর্ডসে ৯৪ বলে করলেন ঐতিহাসিক সেই সেঞ্চুরিটা। যেটির পর লর্ডসের অনার্স বোর্ডে জায়গা করে নিয়েছিলেন তামিম। ১৯৯০ সালের পর মোহাম্মদ আজাহারউদ্দিনের পর লর্ডসে ওটিই ছিল দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি। পরের টেস্টে ওল্ড ট্রাফোর্ডে করলেন ১০০ বলে সেঞ্চুরি। ব্যস, তামিমের সেঞ্চুরি-আখ্যান এ পর্যন্তই। এরপর সময়ের ফিতায় চার বছর পার হয়েছে। সেঞ্চুরির দেখা নেই তামিমের। এ ওপেনার কি পারবেন আগামীকাল শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে চার বছরের সেঞ্চুরি-খরা কাটাতে?
তামিমের মতো বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাটসম্যানও আজ আবির্ভাব হয়েছেন ধৈর্যের প্রতিচ্ছবি হিসেবেই। গোটা দিনে ৯০ ওভার খেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেট ১৯৩। দিন শেষে তামিমের সঙ্গে সাকিব আল হাসান উইকেটে আছেন ১৩ রানে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend