গরুর মাংস ৪০০ ছুঁই ছুঁই!

cb5eae19aa3808fd7bb8041231d40200-12

রাজধানী সহ সারাদেশে এখন এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৪০০ ছুঁই ছুঁই। ভারতীয় গরু না আসার অজুহাত দেখিয়ে মাংসের দাম বাড়িয়েই চলেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকারের সঠিক তদারকি না থাকার কারণে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছেন। মাংস ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এভাবে চললে আসছে রোজাতে আরও বাড়বে দাম।

এই প্রতিবেদক রাজধানীর হাতিরপুল বাজার, কারওয়ান বাজার ও মিরপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখেছেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকায়। প্রতি কেজিতে অন্তত ২৫০ গ্রাম হাড় দেওয়া হচ্ছে। তবে এখানে হাড় ছাড়া মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে। এই বাজারে মাংস কিনতে এসেছেন চিকিৎসক শোয়েব তারিক। তিনি জানান, গত সপ্তাহেও ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে কিনেছেন। এখন কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে গেছে। হাতিরপুল বাজারের মাংস বিক্রেতা মজনু মিয়া বললেন, ‘কী আর কমু কন? ভারত থাইক্যা তো গরু আহে না। দেশি গরু, বেশি দামে কিনতে হয়। হের লাইগ্যা দামও বেশি।’

তবে কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকায়। পূর্ব নাখালপাড়ার আবদুল মাবুদ মাংস কিনতে এসে বলেন, ‘যেভাবে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে, খাওয়া বন্ধ করা ছাড়া আর উপায় দেখি না।’ এই বাজারের মাংস বিক্রেতা আবদুর রহমানও অন্য বিক্রেতাদের মতো ভারতীয় গরু না আসার অজুহাত দেখালেন। তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে গরু আসে না। আগে যা-ও আইতো, অখন তো এক্কেবারেই বন্ধ। বর্ডার না খুললে গরুর দাম কইমতো না।’
তবে রাজধানীর মিরপুরের বাজারগুলোতে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কম। মিরপুর ১০ নম্বরসংলগ্ন এলাকার একটি বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। সকালে কথা হয় এই এলাকার মাংস বিক্রেতা বিপ্লবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় ৩৬০ টেহা দাম। বাজারে গরু নাই, গরু কম। এর লাইগ্যা বেচাকেনা কইম্যা গেছে। আমার তো বেশি বেশি কাস্টমার দরকার। অখন বেশি দামের লাইগ্যা একটা গরু বেচি। একটা বেচলে লাভ নাই। দুইটা বেচলে লাভ।’
বাজারগুলোতে মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শবে বরাতে আরও দাম বাড়তে পারে। ওই সময় মাংসের চাহিদাও বেশি থাকবে। অনেকে বলেছেন শবে বরাতে গরুর মাংস ৪০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলমও স্বীকার করলেন রাজধানীর অনেক বাজারে গরুর মাংস ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, খিলগাঁও, কাঁঠালবাগান বাজার, ধূপখোলা ও ট্যানারি মোড় এলাকায় গরুর মাংস ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রবিউল আলম বলেন, ‘ভারত যেহেতু গরু দেবে না, তাই সরকারের কাছে আবেদন করেছি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। বিকল্প হিসেবে পার্শ্ববর্তী অন্য দেশ থেকে গরু-মহিষ আমদানি করা যায় কি না, সরকারকে তা ভেবে দেখতে হবে।’ তিনি জানান, গত তিন মাসে দেশের নিজস্ব গরু বাজারে মাংসের চাহিদা মিটিয়েছে। এখন তা শেষের দিকে। সামনে রমজান মাসে গরুর মাংসের দাম আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, ‘আমরা শুধু রোজার মাসে বাজার তদারকি করি। অন্য সময় করি না।’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend