ভোট নিয়ে হতাশ কূটনীতিকরা

vote-diplomatঢাকা এবং চট্টগ্রামে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিদেশী কূটনীতিকরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। জালভোট, ভোটকেন্দ্রে বৈধ ভোটার ও পর্যবেক্ষকদের প্রবেশে বাধা, ভোট বর্জন, বিভিন্ন প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কারসহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বিদেশীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি এই নির্বাচন নিয়ে যাতে সামনের দিনগুলোতে সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়, সেই আহ্বানও জানিয়েছেন। বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্র সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ শেষে গণমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘মঙ্গলবার সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার যে ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে ব্যাপক ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন পাওয়া; একইসঙ্গে বিএনপি সিটি করপোরেশন নির্বাচন বয়কটের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমরা হতাশ।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে সমস্ত অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। আইনের আওতায় থেকে কাজ করার জন্য এবং যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়ানোর জন্য আমরা সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য যেকোনো ধরনের সহিংসতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’ এদিকে, মঙ্গলবারের ভোট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিজেল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘হতাশ এবং মজার (ইন্টারেস্টিং)।
আমি এটি নিয়ে পাঁচ নম্বর কেন্দ্র পরিদর্শন করছি। আমাদের পর্যবেক্ষণ পরে জানাব।’ এর আগে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিজেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সেন্ট জোসেফ কারিগরি বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে এসেই তিনি সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে জানতে চান, ‘ভোট বন্ধ কিনা?’ জবাবে প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, ‘গোলমালের কারণে আধাঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।’ ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডব্লিউ গিবসন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ভোট নিয়ে বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দলের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে মঙ্গলবারের ভোটের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত। অনিয়মের সকল অভিযোগ দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হওয়া জরুরি। সকল ভোটারের গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান নিশ্চিত করতে সকল রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। যারা নির্বাচনে জিতবেন তাদের স্ব-স্ব শহরের অধিবাসীদের প্রয়োজন এবং ইচ্ছা অনুযায়ী তাদের সেবা প্রদানের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।’ রবার্ট ডব্লিউ গিবসন বলেন, ‘দুপুরে সিটি করপোরেশন নির্বাচলগুলোর মাঝ পথ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বিএনপির এই সিদ্ধান্তের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আজ (মঙ্গলবার) রাতে এবং আগামী কয়েক দিন সহিংসতা বা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী কোনো ঘটনা ঘটবে না।’ জার্মানীর একজন কূটনীতিক (রাজনৈতিক) নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘অবাধ এবং সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের উদাহরণ বাংলাদেশ!’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend