‘বোলারদের চ্যালেঞ্জটা বেশি নিতে হবে’

Masrafiভারতের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ নিয়ে কথার লড়াই জমে উঠেছে প্রতিবেশী ২ দেশে। তবে কথার লড়াই দিয়ে তো আর ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়; মাঠের পারফরম্যান্সের দিকেই মনোযোগ দিতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। দলের নেতা মাশরাফিও এমনটাই মনে করছেন। বুধবার অনুশীলনের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচের সামগ্রিক দিক নিয়ে তিনি কথা বলেছেন।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের বোলার নাকি ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জটা বেশি নিতে হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমি বলব ২ টাই। আমাদের অবশ্যই ভাল স্কোর গড়তে হবে। অথবা ওরা (ভারত) যে স্কোর দেবে জিততে গেলে তা চেজ করতে হবে। এ ছাড়া বোলারদেরও চেষ্টা থাকবে যতটা সম্ভব অল্প রানে ভারতকে বেধে ফেলা যায়। এ কারণে আমি বলব জিততে গেলে ব্যাটিং-বোলিং ২ টাতেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। তবে যে ধরনের উইকেটে খেলা হবে তাতে বোলারদের চ্যালেঞ্জটা একটু বেশিই থাকবে।’
এ ম্যাচে টস কতটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ শক্তিশালী। সে ক্ষেত্রে চেজ করা কতটা কঠিন হবে। এ ছাড়া দলে কোনো পরিবর্তন থাকছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেছেন, ‘যদি আল্লাহ সুস্থ রাখেন হয়তো আমি ঢুকতে পারি। এটা কনফার্ম। দল নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। আর টসটা আমার কাছে মনে হয় না এতটা প্রভাব ফেলবে। আসলে টসের উপর নির্ভর করে দল সাজানো কিংবা খেলা যায় না। তাই এটা নিয়ে ভেবে বেশি লাভ নেই।’
আপনারা ভাল খেলছেন দেশবাসী স্বপ্ন দেখছে; এই স্বপ্ন আপনাদের কতটা ছুঁয়ে গেছে? জবাবে মাশরাফি বলেছেন, ‘স্বপ্নটা সবাইকেই ছুঁয়ে যায়। সত্য কথা বলতে- স্বপ্নের শেষও নেই। প্রথমে আমাদের স্বপ্ন ছিল কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার। এখন স্বপ্ন সেমিফাইনালে যেতে পারব কিনা। এগুলো আসবে এটা খুব স্বাভাবিক। আমরা আমাদের খেলা নিয়ে মনযোগী। ভাল খেলতে পারলে অবশ্যই আমাদের সুযোগ থাকবে জয়ের।’
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়েছিলেন। এবার আবার তারাই মুখোমুখি। আগের ২ দল আর বর্তমানের ২ দলের মধ্যে কেমন পার্থক্য আছে বলে মনে করছেন? সবাই কতটা মোটিভেটেড এ ম্যাচ নিয়ে। এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘সবাই ভাল খেলছে তাই মোটিভেটেড আছে। তরুণ খেলোয়াড়রা পারফর্ম করছে। ২০০৭ সালের ভারত দলও অনেক ভাল ছিল। অনেক গ্রেট ক্রিকেটার ছিল। শচীন ছিল, সৌরভ গাঙ্গুলি ছিল। শেওবাগ ছিল। আসলে আমি মিলাতে চাই না; কারণটা হচ্ছে এগুলো মাঠের পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব ফেলে না। এটা শুধমাত্র সুন্দর স্মৃতি। কিন্তু মাঠে এটা কোনো সাহায্যই করে না।’
৩ মাস কন্ডিশনের সঙ্গে রয়েছে ভারত। দর্শকও ওদের অনুকূলে থাকবে এ অবস্থায় তারা কতটা এগিয়ে থাকবে? এ প্রশ্নে মাশরাফি বলেছেন, ‘পরিষ্কারভাবে ওরা সবদিক থেকেই এগিয়ে থাকবে। এ সব যক্তি তর্ক দিয়ে তো মাঠে খেলা হয় না। কারণ মাঠের বাইরের কথাগুলো তো মাঠে কাজে দেবে না। সার্বিক চিন্তা করলে অবশ্যই ভারত এগিয়ে আছে। আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে অন্যথায় লড়াই করা সম্ভব হবে না।’
পুরো বিশ্বকাপটাই দুর্দান্ত গেছে। কতটুকু উপভোগ করেছেন আর কালকের ম্যাচটা কতটুকু উপভোগের পরিকল্পনা আছে- এমন প্রশ্নে মাশরাফি বলেছেন, ‘সবাই খুব উপভোগ করছে। আমার মনে হয় আমাদের হারানোর কিছু নেই। আমরা কালকের (বৃহস্পতিবার) জন্য সেরা প্রস্তুতিটা নেওয়ার চেষ্টা করছি। কালকের ম্যাচটা আমরা সবাই উপভোগ করতে চাই।’
মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন। কাল আবার মাঠে নামবেন। উইকেট দেখে কি মনে হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আসলে ভারতের সঙ্গে কত রান করলে সুবিধা হবে এটা বলা খুব কঠিন। অন্যতম ব্যাটিং শক্তিশালী দল ভারত। তারা সব সময় রান চেজ করতে পছন্দ করে। আমার বিশ্বাস সবমিলিয়ে যদি আমরা ভাল খেলি, সে ক্ষেত্রে কত রান এটা ব্যাপার না। হয়তো দেখা গেল ২৭০-২৮০ রান করেও ভাল বোলিং করতে পারলে আমরা ম্যাচটা জিততে পারি। ভাল খেললে অবশ্যই আমাদের সুযোগ থাকবে।’
বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের কাছে ভারত বাজেভাবে হেরেছে। কিন্তু বিশ্বকাপে এসে তারা বদলে গেছে। আপনারা কি বিশ্লেষণ করে দেখেছেন ঠিক কি কারণে তারা এত বদলে গেল এমন প্রশ্নে মাশরাফি বলেছেন, ‘অবশ্যই আমরা দেখার চেষ্টা করছি কোথায় তাদের ত্রুটিগুলো আছে। আমরা তেমন একটা পরিকল্পনাও তৈরি করেছি। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলতে চাই। আসলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাটাই মূল বিষয়। সবাই নিজেকে নিয়ে পরিকল্পনা করছে। নিজেদের সমস্যাগুলো বের করার চেষ্টা করছে। আমার বিশ্বাস পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে ফলটা ইতিবাচক হবে।’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend