আন্দোলনে নতুন কৌশল: স্যোশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবে বিএনপি

social.media_অবরোধ-হরতালের ৬০ দিনের মাথায় সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছে। চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সামনের সপ্তাহে গণমিছিলসহ আরো কর্মসূচি দেয়া হবে। আর নতুন আন্দোলন কর্মসূচি আন্দোলনের ছবি ও খবর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এসব তথ্য জানা গেছে বিএনপি’র কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে।

শুক্রবার বিএনপির অবরোধ হরতালের ৬০ দিন পার হয়েছে। এই ৬০ দিনের আন্দোলন নিয়ে মূল্যায়নও করেছে বিএনপি। আর এই মূল্যায়নে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকলেও বিএনপি চেয়ারপারসন অনঢ়। তিনি মনে করেন আন্দোলন এভাবেই এগিয়ে যাবে এবং একসময় সফলতা আসবে।

বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া তাঁর জীবন সায়াহ্নে এই আন্দোলনকে তাঁর শেষ আন্দোলন হিসেবে নিয়েছেন। আর তিনি এই আন্দোলনে বিজয় না আসা পর্যন্ত পিছু হটবেন না।’

আন্দোলনের মূল্যায়নে মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা, কেন্দ্রীয় নেতারা যারা বাইরে আছেন তাদের মধ্যে নিস্পৃহতা এবং লক্ষ্য অর্জনে ব্যাপক সংশয় থাকলেও তা প্রভাবিত করছে না খালেদা জিয়াকে। তিনি মনে করেন,‘ আন্দোলন থেকে পিছু হটলে বিএনপি আরো সঙ্কটে পড়বে।’ তাই অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন তিনি।

এদিকে ৬০ দিনের মূল্যায়নে বিএনপির আন্দোলনে নাশকতা একটি বড় বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর দায় বিএনপির ওপরই পড়ছে। আন্তর্জাতিক মহলও নাশকতা বন্ধের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। জানা গেছে এই দায় এড়িয়ে আন্দোলনে চালিয়ে নিতে বিএনপি হরতাল অবরোধের সঙ্গে গণমিছিল, পতাকা মিছিল ও ঝটিকা মিছিলের চিন্তা করছে।

আহমেদ আযম খান জানান,‘ আগামী সপ্তাহে চলমানমান কর্মসূচির সঙ্গে নতুন কর্মসূচি আসছে এটা নিশ্চিত। পরিকল্পনায় নানা ধরনের কর্মসূচি রয়েছে। তার মধ্যে গণমিছিলের কর্মসূচি চুড়ান্ত হয়েছে।’

আর বিএনপি’র চেয়ারপারসনের প্রেস উইং-এর কর্মকর্তা শাইরুল কবির খানও  আগামী সপ্তাহে গণমছিলের কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন সংবাদ মাধ্যমের ওপর ‘চাপ’ থাকায় বিএনপি যেসব কর্মসূচি পালন করছে তা সংবাদ মাধ্যমে তেমন আসছে না। আহমদে আযম খান দাবী করেন,‘ এরমধ্যেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলকায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা মিছিল পিকেটিং করছেন। তবে সেসব খবর সাধারণ মানুষ জানতে পারছেন না সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ না হওয়ায়।’ আর কর্মসূচি পালনের খবর কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানোরও তেমন সুযোগ নেই।

নেতারা আত্মগোপনে। খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় থেকে যেটুকু করা সম্ভব তা করা হচ্ছে। ‘তাই এবার বিএনপি যেসব কর্মসূচি পালন করবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে তার ছবি ও খবর ছড়িয়ে দেয়া হবে।’ বলে জানান আহমেদ আজম খান।

তিনি বলেন, ‘সব পর্যায়ে নির্দেশনা হল নেতা-কর্মীরা যেখানে যে অবস্থায় যে কর্মসূচি পালন করবেন তার ছবি ও খবর যেন সম্ভব হলে সেখান থেকেই ফেনবুকতসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপ করা হয়।’ আর এসব ছবি ও খবর স্যোশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মতে,‘ এতে খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীরাও উৎসাহিত হবেন।’ এরই মধ্যে ঢাকার বাইরের কিছু কর্মসূচির ছবি এভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

গণমিছিলের কর্মসূচি সম্পর্কে বিএনপি’র এক নেতা জানান, ‘এই ধরণের কর্মসূচি নাশকতার দায় এড়াতে বিএনপিকে যেমন সহায়তা করবে। আর সরকার বাধা দিলে আন্তর্জাতিক মহলকেও তা বলা যাবে। বোঝান যাবে সরকার বিরোধীদের কীভাবে দমন করা হচ্ছে।’

আহমেদ আযম খান বলেন, ‘স্যোশাল নেটওয়ার্ককে ঠিকমত কাজে লাগান গেলে দু’টি লাভ হবে। প্রথমত বিকল্প মাধ্যমে মানুষকে জানান যাবে যে বিএনপি মাঠেও সক্রিয়। দ্বিতীয়ত:আন্তর্জাতিক মহলকেও বোঝান যাবে প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমকে সরকার চাপে রেখেছে। তাই খবর প্রচার ও জানার উপায় এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।’

শাইরুল কবির খান জানান, ‘খালেদা জিয়াকে যতই বিচ্ছিন্ন করা হোক তিনি পিছু হটবনে না। শনিবারও তিনি গুলশান কার্যালয়ে থাকা নেতা-কর্মীদের একথা জনিয়েছেন। তিনি আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পালনে প্রস্তুত হতে বলেছেন।’

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend