চিরুনি অভিযানের নির্দেশ

combচলমান রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধে চিরুনি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা পুলিশ, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদরদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দ্য রিপোর্টকে চিরুনি অভিযানের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চলমান সহিংসতা প্রতিরোধে যা যা করণীয় তাই করবে সরকার। রুটিং ওয়ার্কের অংশ হিসেব এ অভিযান পরিচালিত হবে। তবে সহিংসতা প্রতিরোধে অভিযান জোরদার করা হবে।
পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যদের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
চলমান সহিংসতা বিশেষ করে পেট্রোলবোমা ছুড়ে মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একযোগে অভিযান চালাবে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দাদের হাতে ৭৭৯ নাশকতাকারীর নামের তালিকা এসে পৌঁছেছে। ওই তালিকায় পেট্রোল ও হাতবোমা প্রস্তুত, নিক্ষেপ ও সরবরাহকারী এবং অর্থ যোগানদাতাসহ পরিকল্পনাকারীদের নাম রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক এক বছর পর একই দিন ৫ জানুয়ারি সরকার পতনের পরিকল্পনা করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। এ দিন ঢাকায় সমাবেশ করতে না পেরে ৬ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ ঘোষণা দেওয়া হয়। জেলা ও কেন্দ্রীয়ভাবে বিভিন্ন সময় হরতালও চলমান রয়েছে। হরতাল ও অবরোধে অন্তত ২৫ জন দগ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। এ সব ঘটনা প্রতিরোধের জন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থা সারাদেশে পেট্রোলবোমা তৈরি, নিক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতাকারীর তথ্য উদঘাটন করে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করে। ৯০ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে নাশকতা প্রতিরোধে বেশকিছু কৌশলও দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ সারাদেশের চলমান সহিংসতায় পেট্রোলবোমা তৈরি, নিক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতার পেছেনে রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার বাহিনী ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী। এ সব ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য ও প্রমাণসহ সারাদেশের ৭৭৯ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় নাম-ঠিকানার পাশাপাশি সবার রাজনৈতিক পরিচয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই তালিকায় বিএনপির ৪৪৪ নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের ২৯০, জাতীয় পার্টি (জাফর) পাঁচ এবং ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী রয়েছে ৩০ জন। আন্দোলনকালীন নিজ এলাকার চেয়ে অন্য এলাকায় গিয়ে নাশকতা করার কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চলমান হরতাল ও অবরোধে পেট্রোলবোমা হামলার কারণে জনসাধারণের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি চলমান পরিস্থিতিতে রাজনীতিবিদদের সর্ম্পকে বিরূপ মনোভাবও সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় চিহ্নিত বোমাবাজদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। সারাদেশে পেট্রোল ও অকটেন বিক্রি, বাজারজাতকরণের বিষয়টি গোয়েন্দা নজরদারিতে আনা হবে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সহিংসতা প্রতিরোধে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু চিরুনি অভিযানই নয়, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পাহারার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend