তিলোত্তমা বগুড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কোকো

Medecalউত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বগুড়াকে তিলোত্তমা ও আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান আরাফাত রহমান কোকো বগুড়ায় জন্মগ্রহণ না করলেও বাবার জন্মভূমি হিসেবে বগুড়া সিটি করপোরেশনসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশায় বুক বেঁধে ছিলেন বগুড়াবাসী। বিএনপির ক্ষমতা গ্রহণের শেষের পাঁচ বছর যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে এর ধারাবাকিতা থাকলে এতদিনে বগুড়া তিলোত্তমা শহর পরিণত হত। অকালে চলে যাওয়ায় স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বগুড়াবাসীরও।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি বগুড়া। জেলার গাবতলী উপজেলার মহিষবান মণ্ডলপাড়ায় ১৯৩৬ সালে জিয়াউর রহমান পৈতৃক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম কামাল উদ্দীন পণ্ডিত।
১৯৯১ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন ও জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। কিন্তু সেসময় আরাফাত রহমান বয়সে ছিলেন একেবারেই তরুণ।
২০০১ সালে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে আরাফাত রহমান কোকো ও তারেক রহমান বগুড়ায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেন। এরই ধারাবাহিকতায় বগুড়ায় আন্তর্জাতিকমানের শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম নির্মাণ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঁচশ শয্যায় উন্নীতকরণ, শহরের বনানী থেকে সাতমাথা হয়ে মাটিডালি পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দুই লেনের মহাসড়ক, গ্যাস সংযোগসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়।
স্টেডিয়াম স্থাপনকালে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বকুল জানান, সেসময়ে আরাফাত রহমান কোকো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম নির্মাণ করেন। পরে এটি আন্তর্জাতিক ভ্যেনু করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে আইসিসির শর্তমতে বগুড়ায় স্থাপন করেন সুইমিংপুল ও চার তারকা মানের হোটেল নাজ গার্ডেন। এ স্টেডিয়ামে আরাফাত রহমান কোকোর প্রচেষ্টায় ২০০৪ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৬ সালেও এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আর সেখানে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি।
বগুড়া পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট এ কে এম মাহবুবুর রহমান জানান, ২০০১ সালে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে বগুড়াকে বিভাগ করার দাবি ওঠে। কিন্তু বগুড়ার পাশে রাজশাহী বিভাগ থাকায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ওই দাবি বাতিল করে দেন। এরপর তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো বগুড়ার উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। বগুড়াবাসীর শহর থেকে বের হওয়ার ভাল কোনো রাস্তা ছিল না। তারা দুই লেনের মহাসড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিপত্তি দেখা যায় জমি অধিগ্রহণ নিয়ে। এগিয়ে আসেন ‍দুই ভাই। তারা স্থানীয়দের বুঝিয়ে জমির ব্যবস্থা করেন। অবশেষে বগুড়ার বনানী থেকে সাতমাথা হয়ে মাটিরডালি মোড় এবং সাতমাথা থেকে তিনমাথা রেলগেট পর্যন্ত দুই লেনের ১৫ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণ করেন।
এ ছাড়া দুই ভাইয়ের উদ্যোগে বগুড়ায় নার্সিং কলেজ, দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়ক, বগুড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বহুতল কার্যালয় নির্মাণ, বগুড়া সেন্ট্রাল বায়তুর রহমান জামে মসজিদের আধুনিকায়ন, ভারি শিল্প নগরী স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূক কাজ সম্পন্ন করা হয়। তাদের পরিকল্পনায় ছিল একটি আন্তর্জাতিকমানের ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ, পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরসহ বগুড়াকে তিলোত্তমা ও আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend