গুলিতে বিএনপিকর্মী নিহত, রাজশাহীতে মঙ্গলবার হরতাল

79157-(body-show-02)রাজশাহীর পুঠিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপিকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মজির উদ্দিন (৪৫) নামে এক বিএনপির কর্মী নিহত হয়েছেন। তার বাড়ি চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে।
পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
মজির উদ্দিন মাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত চারঘাটের বামনদিঘী এলাকার আজাদ আলীর ছেলে মোমেনুল ইসলাম (৩০) ও পুঠিয়া উপজেলার বালিয়া এলাকার নাজমুল হোসেনের ছেলে তুহিনকে (২৫) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, বিএনপির কর্মী মজিরকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজশাহী জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা বিএনপি।
সংঘর্ষের ছবি তোলার সময় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক সকালের খবর’র ফটো সাংবাদিক আজাহার উদ্দিন জানান, ৫ জানুয়ারি উপলক্ষে সোমবার বিকেলে বানেশ্বর এলাকায় সমাবেশ করার চেষ্টা করে বিএনপি। চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদের নেতৃত্বে চারঘাট বাঘা ও পুঠিয়া এলাকার নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হতে থাকেন। বিকেল ৪টার দিকে সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে যোগ দেয়।
পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও গুলি ছোড়ে। এতে মজির উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আহত হন আবু সাঈদ চাঁদসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। পরে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজশাহীর পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান হাফিজ  জানান, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চারঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাইদ চাঁদের নেতৃত্বে বানেশ্বর বাজারে সমাবেশের চেষ্টা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে বিএনপিকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও গুলি চালায়। সংঘর্ষ থেমে গেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মজির উদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে বিএনপি নেতা আবু সাইদ চাঁদ সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের গুলিতে তাদের কর্মী মজির উদ্দিন নিহত হন।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরহাদ আহমেদ জানান, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জনসভা শুরুর কিছুক্ষণ আগে অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে সহিংসতার আশঙ্কায় তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এরপরেও বিএনপি সেখানে সমাবেশ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কিন্তু পুলিশের ওপর নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।
তিনি আরও জানান, জনগণের যানমালের নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পদ রক্ষার স্বার্থে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি চালায়। এতে বিএনপির এক কর্মী মারা গেছেন বলে শুনেছি।
পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপির কর্মী মজির নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজশাহী জেলা বিএনপি মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend