ডেঙ্গু নির্মূলে অবিস্মরণীয় সাফল্য

dengueডেঙ্গুজ্বর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলসমূহের দ্রুত বর্ধনশীল একটি রোগ, যা ব্রেকবোন ফিভার নামেও পরিচিত। এটি একটি সংক্রামক রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাস-এর কারণে হয়।

এডিস প্রজাতির মশাবাহিত এই রোগ গত ৫০ বছরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ লোক এই রোগের র্ঝুঁকিতে আছে এবং ১০০ টিরও বেশি দেশের অন্তত ৪০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিবছর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২২ হাজার মানুষ।

Adeno-Associated virus
ডেঙ্গু ভাইরাস
মরণঘাতী এই রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এখনো কোনো ঔষধ স্বীকৃত নয়। তাই ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এডিস মশা নির্মূলকে গুরুত্ব দেয়া হয়।

07_IN_THMNI_DENGUE_1250233g
মশারোধক স্প্রে করা হচ্ছে
ডেঙ্গু জ্বরের যে উপসর্গগুলো দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে- জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি এবং গাঁটে ব্যথা এবং ত্বকে র‍্যাশ হয় যা হামজ্বর সদৃশ। স্বল্পক্ষেত্রে অসুখটি প্রাণঘাতী ডেঙ্গু হেমোর‍্যাজিক ফিভার-এ পর্যবসিত হয়, যার ফলে রক্তপাত, রক্তে অনুচক্রিকার কম মাত্রা এবং প্লাজমার নিঃসরণ অথবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম-এ পর্যবসিত হয়, যেখানে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। মোট চারটি ভাইরাসের কারনে ডেঙ্গুজ্বর হতে পারে। এই চারটি ভাইরাসের একটির আক্রমণ হলেই অন্যগুলোর আক্রমণ আরো সহজ হয়ে যায়। মানুষের শরীরে এই ভাইরাস একসপ্তাহ পর্যন্ত সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে তারা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে ফেলে। মানুষের শরীরে তখন এই ভাইরাসগুলোই ড্রাইভিং সিটে থাকে।

dengue_fever-apha-120416
মশার আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মশারির ব্যবহার আছে বিশ্বের অনেক দেশে
এই মারণাত্মক রোগ নির্মূলে বিজ্ঞানীরা এমন এক প্রতিষেধকের কথা ভাবছেন, যা বাস্তবিকভাবেই এই চারটি ভাইরাসেরই প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে। বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরের এমন এক এন্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন, যেটা আগে কখনোই আবিষ্কৃত হয়নি। একদল ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের রক্ত পরীক্ষা করার পর ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের একদল বিজ্ঞানী এই এন্টিবডি আবিষ্কার করেছেন।

patient-with-dengue-fever
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত একজন রোগী
নেচার ইমিউনোলোজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁরা আক্রান্তদের রক্তে এমন এক এন্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন যেটা ডেঙ্গুর চারটি ভাইরাসেরই একটি নির্দিষ্ট অংশে আক্রমণ করে, যা ভাইরাসের আনবিক বন্ধন ভেঙ্গে দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দিতে সক্ষম।

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, এই ধরনের এন্টিবডি মানুষ এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গের দেহেও পাওয়া যায়।

foco-da-dengue-2এই ধরনের জমে থাকা পানি থেকেই এডিস মশার জন্ম
সফলভাবে এই এন্টিবডি আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা এখন খুব শীঘ্রই প্রানীদেহের উপর এর পরীক্ষা চালাবেন। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই এন্টিবডির সাহায্যে যেকোনো ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধে নতুন ও কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরী করতে পারবেন তাঁরা, যেটা একসময় ডেঙ্গু পুরোপুরি নিমূলে সহায়তা করবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend