বিকেএমইএর দাবি গ্যাসের অভাবে নিট পোশাকের ৪০ শতাংশ উৎপাদন ব্যাহ

গ্যাস-সংকটে নিট পোশাক কারখানাগুলো সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না। বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে সক্ষমতার ৬০ শতাংশ। পুরো সক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারলে ২০১৬ সালে নিট পোশাকের রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন (তিন হাজার কোটি) ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।

বাংলাদেশ নিট পোশাক রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) তৈরি করা পোশাকের আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের তথ্যসংবলিত একটি ডিরেকটরি প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেছেন। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার এটি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

অনুষ্ঠানে বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ‘পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস—এই তিনটি হচ্ছে নিট পোশাকের কাঁচামাল। বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিদ্যুতের সমস্যা কেটে গেছে। কিন্তু গ্যাসের সমস্যা কাটেনি। বর্তমানে নিট পোশাকের রপ্তানি ১২ বিলিয়ন ডলার। আমরা গ্যাসের কারণে ৪০ শতাংশ উৎপাদন করতে পারি না। গ্যাসের পরিবর্তে আমাদের ডিজেল ব্যবহার করতে হয়। তাই সরকারের উচিত ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়া।’

নতুন বাজারে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৪৯ কোটি ডলার, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৬০ কোটি এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১০১ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এমন তথ্য উল্লেখ করে বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, নিট পোশাকমালিকেরা নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াতে মনোযোগী হয়েছেন। রপ্তানি বাড়াতে রাশিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো সম্ভাবনাময় বাজারগুলোতে নিট পোশাকের মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।

পোশাক খাতের সব সংগঠনগুকে নিয়ে একটি টেক্সটাইল ফেডারেশন গঠনের প্রস্তাব করেন সেলিম ওসমান।

অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘আমি মন্ত্রী হওয়ার পর বিভিন্ন পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখেছি। কিন্তু এই সময়ে মাত্র একটি নিট পোশাক কারখানায় অসন্তোষ হয়েছে। সেটাও বিকেএমইএর নেতারা নিজেরাই সমাধান করেছেন।’ তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে একধরনের অবিশ্বাস রয়েছে। এটা দূর করতে পারলে দেশের পোশাক খাতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় বিকেএমইএর সঙ্গে যৌথভাবে শ্রমিকদের জন্য একটি হাসপাতাল করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, যাঁরা শ্রমিক নন, তাঁরাই শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করেন। কিছু শ্রমিকনেতা আছেন, যাঁদের কাজই এটা। তাঁরা বিদেশে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলেন। দেশীয় পোশাক খাতের প্রতিদ্বন্দ্বীদের হয়ে তাঁরা কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘এএফএল-সিআইও আমাদের দেশে শতভাগ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন বাস্তবায়নের জন্য চাপ দেয়। অথচ নিজের দেশের মাত্র ৭ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন আছে, সেটা তারা দেখে না।’

মুন্সীগঞ্জের বাওশিয়ার পোশাকপল্লির মতো নারায়ণগঞ্জের শান্তিরচরে বিকেএমইএ পল্লি করা হবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সাংসদ শামীম ওসমান, বিকেএমইএর দুই সহসভাপতি আসলাম সানি ও মনসুর আহমেদ বক্তব্য দেন।

বিকেএমইএর তৈরি করা ডিরেকটরিতে ১৬০টি দেশের ২৫ হাজারের বেশি ক্রেতার ঠিকানা এবং ব্যবসাসংক্রান্ত তথ্যের উল্লেখ আছে। দুই হাজার ১০০ পৃষ্ঠার এই বইয়ে বিভিন্ন দেশের আমদানি পরিসংখ্যান, আমদানি পণ্যের তালিকা, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা, তাদের জিডিপির আকারসহ নানা তথ্য ঠাঁই পেয়েছে। ডিরেকটরিটি বিকেএমইএর নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কিনতে পাওয়া যাবে

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend