কৃষকের জমি দখল করে যুবলীগের কার্যালয়

8ba9847b105c2d7038ec814b3f74f02b-Untitled-2সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাবুলিয়া বাজার এলাকায় এক কৃষকের জমি দখল করে ইউনিয়ন যুবলীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা অনিয়মিতভাবে ওই কার্যালয় ব্যবহার করছেন।
সদর উপজেলার বেলেডাঙ্গা গ্রামের হোসেন আলী মোল্লা জানান, উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে বৈকারি-সাতক্ষীরা সড়কসংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের চার শতক জমি চলতি বছরের ২৪ জুলাই থেকে এক বছরের জন্য তিনি বন্দোবস্ত নেন।
হোসেন আলী অভিযোগ করেন, তাঁর কেনা ও বন্দোবস্ত নেওয়া ওই জমির সামনের অংশে গত ১৭ অক্টোবর আঁগড়দাড়ি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম কার্যালয় নির্মাণ করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি মো. শওকাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. সামছুর রহমানের নেতৃত্বে এই কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এঁদের মধ্যে শওকাত বাবুলিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এবং সামছুর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। ঘর নির্মাণের বিষয়ে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এরপর গত ৫ নভেম্বর রাতে পুলিশিং কমিটির সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলে সেখানে ইউনিয়ন যুবলীগের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। পাশাপাশি যুবলীগ কার্যালয়ের ভেতর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ছবি টাঙানো হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, হোসেন আলীর দাবিকৃত জমির সামনের অংশে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ২০ ফুট দীর্ঘ ও ১০ ফুট প্রস্থের একটি ঘর। সেখানে আঁগড়দাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে। ঘরের ভেতর টাঙানো রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। ঘরে দুটি চেয়ার, একটি টেবিল ও দুটি বেঞ্চ রাখা হয়েছে।
বাবুলিয়া বাজারে রিং স্লাব ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, শওকাত হোসেন ও সামছুর রহমানের নেতৃত্বে এ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পাশে বসানো হয়েছে একটি চায়ের দোকান। ওই ঘরে প্রথমে পুলিশিং ফোরামের সাইনবোর্ড টাঙানো হলেও তা খুলে যুবলীগের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।
শওকাত হোসেনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। সামছুর রহমান বলেন, এক বছর আগে সরকারি খাসজমিতে যুবলীগের কার্যালয় নির্মাণ করেছেন। বিষয়টি জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সবাই জানেন। হোসেন আলী মোল্লা তাঁদের কার্যালয় নির্মাণের পর জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল মান্নান জানান, অন্যায়ভাবে অন্যের জমিতে যুবলীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি কোনোভাবেই এটিকে সমর্থন করেন না। কার্যালয় তুলে দেওয়ার জন্য তিনি সাতক্ষীরা সদর সহকারী পুলিশ সুপার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু জানান, তাঁদের সম্মতি না নিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করে তাতে যুবলীগের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। বিষয়টি তিনি জানার পর সাইনবোর্ড নামিয়ে নিতে বলেছেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend