১৮তম সম্মেলন শুরু শনিবার সার্ক সম্মেলনে বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি

saarc-logo-1সার্ক সম্মেলন শুরুর সময়েই বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছে সার্কভুক্ত দেশসমূহের সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকরা। এ লক্ষ্যে দেশগুলোর পরিবেশবাদীরা ইতোমধ্যে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছেন।
‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য গভীর সমন্বয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে দক্ষিণ এশিয়ার আট জাতির সহযোগিতামূলক সংস্থা সার্কের ১৮তম শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। এ নিয়ে নেপালে তৃতীয়বারের মতো সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শনিবার হবে প্রোগ্রামিং কমিটির বৈঠক, তারপর স্ট্যান্ডিং কমিটি, কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স সভা অনুষ্ঠিত হবে। ২৬ ও ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশসমূহের সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের সংগঠন পিপলস সার্ক এই বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে।
এ ছাড়া সংগঠনটি পরিবেশ, জলবায়ু, জনগণের জীবন মান উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানান ইস্যুতে সার্কের মূল অনুষ্ঠানে পাঠানোর জন্য সেমিনারেরও আয়োজন করেছে।
জানা গেছে, সেমিনারে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে উঠে আসা সমস্যাগুলো ২৬ নভেম্বর সার্কের মূল অনুষ্ঠানে পাঠানো হবে। দাবি পূরণের জন্য বিক্ষোভের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হবে।
জানা গেছে, সার্কের মূল অনুষ্ঠানস্থলে বিক্ষোভ ও সেমিনারে অংশ নিতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক নাগরিক নেপালে অবস্থান করছেন।
পিপলস সার্ক নেতৃবৃন্দের দাবি, ইতোমধ্যে ১৭টি সার্ক সম্মেলন শেষ হয়েছে। প্রত্যেকটি সম্মেলনে একযোগে সার্কভুক্ত দেশসমূহের দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখনো সার্কভুক্ত দেশগুলোর ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। তাই এবার সম্মেলনে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা থাকবে।
পিপলস সার্কের নেতারা মনে করেন, এবার সার্কের মূল থিম আঞ্চলিক ‘যোগাযোগবাদ’।

এর অর্থ সার্কভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে সড়ক পথে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করতে পারবে ব্যবসায়ীরা। এটা সত্য এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক উন্নয়নের ফলে ব্যবসা সংশ্লিষ্টদের জীবন-মানের উন্নয়ন ঘটবে। কিন্তু এই আঞ্চলিক যোগাযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে। এর সঙ্গে জনগণের জীবন-মানের কোনো সম্পর্ক নেই।
নেতারা বলছেন, আঞ্চলিক যোগাযোগ ধারণায় তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জীবন-মান উন্নয়ন করতে হলে শুধু বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়টি একক কোনো কৌশল হতে পারে না, বরং সার্ক অঞ্চলের জনগণের অবাধ যাতায়াত অধিকার, সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করার মাধ্যমেই দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব।
পিপলস সার্কের নেতাদের দাবি, জনগণের দাবি পূরণের জন্য সার্ক ফুড ব্যাংককে কার্যকর, কৃষিতে পারষ্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, আঞ্চলিক ও সমতার ভিত্তিতে পানির ব্যবস্থাপনা, সার্ক সিড ব্যাংক, জলবায়ু পরিবর্তনে ঢাকা ও থিম্পু ঘোষণার বাস্তবায়নের দাবি জানানো হবে আন্দোলনের মাধ্যমে।
নেপালে অবস্থানরত পিপলস সার্কের বাংলাদেশ অঞ্চলের প্রতিনিধি মুস্তফা কামাল আকন্দ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এবারের সার্কের মূল আলোচ্য বিষয় যোগাযোগ। ভারত শুধুমাত্র আঞ্চলিক যোগাযোগের জন্য সড়ক পথকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কিন্তু একসময় বুড়িগঙ্গা দিয়ে দিল্লী যাওয়া যেত। আমরা চাই আঞ্চলিক যোগাযোগে নৌপথেও প্রাধান্য পাক।’
কাঠমান্ডুতে অবস্থানরত নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসাইন দ্য রিপোর্টকে বলেন, দাবি আদায়ে আমরা পিপলস সার্কের উদ্যোগে বিক্ষোভ করব।
এবার সার্ক সম্মেলনে সার্কভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যান চলাচলের বিধিবিধান সংবলিত মোটর বেহিকাল চুক্তি, আঞ্চলিক রেলওয়ে চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend