নালিতাবাড়ীতে ২ মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

Lash-Uttolonপ্রতিপক্ষের হামলায় চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুর পরও হত্যা মামলা গ্রহণ না করার অভিযোগে বাদীপক্ষের আবেদনক্রমে দাফনের প্রায় ২ মাস পর কবর থেকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সেকান্দর আলী (৫৬) নামে এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সামছুদ্দিন মুন্নার উপস্থিতিতে ওই লাশ উত্তোলন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে ওই লাশ হস্তান্তর করা হয়। তবে এ বিষয়ে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।

জানা যায়, উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামে পরস্পর আত্মীয় ইদ্রিস আলীর সাথে জয়নাল আবেদীনের মাত্র ১০ শতক আবাদি জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ২৯ জুলাই বিরোধপূর্ণ ওই জমির ফয়সালা করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলীর উপস্থিতিতে তালতলা বাজারে এক শালিস বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের একপর্যায়ে জয়নাল আবেদীন (৪৫) ও তার ৩ ভাই মো: আবুল কাশেম (৪০), আমজাদ আলী (৩৮), মো: ফজল হক (৩৬), জয়নালের ছেলে রুপচান মিয়া (২৬) প্রতিপক্ষ সেকান্দর আলী ওরফে সেকাম (৫৬) এর উপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। আহত সেকান্দরকে প্রথমে নালিতাবাড়ী ও পরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থান অবনতি হলে তাকে ৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ সেপ্টেম্বর সেকান্দর মারা যায়।
এদিকে ওই ঘটনার পরপরই সেকান্দরের স্ত্রী মোছা: সাজেদা খাতুন বাদি হয়ে নালিতাবাড়ী থাানায় একটি মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ সাধারণ জখমের একটি মামলা রেকর্ড করে এবং ওই মামলায় আদালতে তড়িঘড়ি অভিযোগপত্র দাখিল করে। সেকান্দরের মৃত্যুর পর তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালেও কোন কাজে আসেনি। অন্যদিকে সেকান্দরের প্রতিপক্ষ স্থানীয় একটি অশুভ মহলের যোগসাজসে আপোষ-রফার নামে অর্থের প্রলোভন দিয়ে তার লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু দাফনের পর আপোষ-রফা থেকে পিছু হটায় সেকান্দরের স্ত্রীর আবেদনক্রমে আদালত তড়িঘড়ি করে দাখিল করা অভিযোগপত্রের বিষয়ে অধিকতর তদন্তসহ সেকান্দর আলীর লাশ একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে উত্তোলনপূর্বক ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আমিনুল হক জানান, সেকান্দর আলী ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি হলেও সুস্থ্য হয়ে ফিরে এসেছিলেন। শুনেছি এরপর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এছাড়া সেকান্দর আলীর মৃত্যুর পূর্বেই তার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়ে যাওয়ায় ওই মামলায় আর করণীয় ছিল না। তদুপরি আদালতের নিদের্শে মামলাটির বিষয়ে অধিকতর তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর সেকান্দরের মৃত্যু পূর্বের আঘাজনিত না অন্য কারণে বা অন্য রোগে হয়েছে তা বলা যাবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend