সালিসকারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় জুতাপেটার শিকার

imagesভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সালিসে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করেছেন ক্ষুব্ধ লোকজন। এ সময় চেয়ারম্যান এক বিক্ষোভকারীকে জুতাপেটা করেন। এর প্রতিবাদে লোকজন তাঁকে ধাওয়া দিয়ে অবরোধ করে রাখেন।
পরে চেয়ারম্যানের বড় ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে লোকজন চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দেন।
পশ্চিম ইলিশা ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিউদ্দিন ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, গত শনিবার গভীর রাতে ইউপি চেয়ারম্যান বশির আহম্মদের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত মঞ্জু ও রিপন হাওলাদার বাজার এলাকার এক ব্যবসায়ীর ঘরে ঢুকে তাঁর স্ত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ওই গৃহবধূ মঞ্জুকে আটক করে চিৎকার দিলে রিপন পালিয়ে যায়। পরে লোকজন এলে মঞ্জু তার লুঙ্গি ও মুঠোফোন রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি কর্ণপাত করেননি। পরে সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদে সালিস বসান চেয়ারম্যান। সেখানে মঞ্জু ও রিপনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০টি বেত্রাঘাতের শাস্তি ঘোষণা করেন। কিন্তু শাস্তি কার্যকর না করেই চেয়ারম্যান সালিস শেষ করলে উপস্থিত লোকজন ফুঁসে ওঠেন। তাঁরা ‘রায় মানি না, মানি না’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে পরিষদে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পড়ে চেয়ারম্যান সালিস স্থগিত করে চলে যান।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান তাঁর ক্যাডারদের পক্ষ নিয়ে নামমাত্র সালিস করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক শ লোক শ্লীলতাহানির সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে হাওলাদার বাজারে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভে উপস্থিত গৃহবধূর পক্ষের মোসলেহ উদ্দিনকে জুতাপেটা করেন চেয়ারম্যান। তখন লোকজন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে ধাওয়া করেন। চেয়ারম্যান বাজারের একটি দোকানে আশ্রয় নিলে লোকজন প্রায় দুই ঘণ্টা তাঁকে সেখানে অবরোধ করে রাখেন। তাৎক্ষণিক সেখানে চেয়ারম্যানের বড় ছেলে গিয়াস উদ্দিন লোকজনকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করেন।
মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘সঠিক বিচার চাওয়ার কারণে চেয়ারম্যান আমাকে জুতাপেটা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ বলেন, ‘শিশু ও নারী নির্যাতনের ঘটনার সালিস আমি করতে চাইনি। আমার ওপর জোর করা হয়েছে। আর মোসলেহ উদ্দিন আমার সঙ্গে বেয়াদবি করায় তাকে জুতাপেটা করেছি।’
তবে গৃহবধূর স্বামী বলেন, শ্লীলতাহানির ঘটনার পর চেয়ারম্যান তাঁকে বিচার করে দেওয়ার কথা বলেছেন। এ কারণে তিনি থানায় কোনো অভিযোগ দেননি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend