প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ: ঝিনাইগাতীতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র

attosatমুহাম্মদ আবু হেলাল, ঝিনাইগাতী :

প্রবাদে আছে, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, সমাজের মুকুট। সেই শিক্ষকরা যদি হয়, প্রতারক, প্রবঞ্চক ও নিয়োগ বাণিজ্যের দালাল, প্রতারক চক্রের মূল হোতা, তাহলে সেই শিক্ষককে কি উপাদিতে ভূষিত করা যায় ? এমনই অনেক প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় সাধারণ জনগনের মাঝে। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে জনগণের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক মৌজায় মৌজায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষনা দেন ঠিক সেই মূহুর্তে শেরপুরের সীমান্তবর্তী অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া ঝিনাইগাতীতে এক দল প্রতারক চক্র নামকাওয়াস্তে স্কুল নির্মাণ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়েও অধিকজনকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করে, শিক্ষিত ও বেকার যুবক যুবতিদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এদের মধ্যে যারা অধিক ভাগ্যবান ও পেশী শক্তিতে বলবান , তাদের ঠাঁই হয়েছে সরকার স্বীকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আর যাদের খুটির জোড় কম অথবা একটু দূর্বল প্রকৃতির তাদের সাথে ওই চক্রটি নিয়েছে প্রতারনার আশ্রয়। এমনই অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। এই প্রতারক চক্রের সকলেই কোন না কোন সরকারী প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা। এদের দৌরাত্ব ও শক্তির কারণে অনেক প্রতারিত ব্যক্তি মূখ না খোললেও সরাসরি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর ৩ শিক্ষককে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলার ঘাগড়া কামারপাড়ার আব্দুল আওয়ালের ছেলে আজিজুর রহমান। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু বকর সিদ্দিকের স্বাক্ষরিত স্মারক নং উশিঅ/ঝিনাই/৩৮৭(৬) সূত্র ঃ ০৫.৩০.৮৯৩৭.০০১.৪৮.১৩.৩৯৪ তারিখ ১৯.৮.২০১৪ইং মতে নোটিশ দিয়েয়েছে ওই তিন অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকাকে। অভিযুক্ত ওই তিন শিক্ষক শিক্ষিকা হলেন, জগৎপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লুৎফর রহমান লেবু, বাকাকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সালমা আক্তার ও পশ্চিম বেলতৈল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাইয়ূম। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার মেয়েকে চাকুরী নিয়ে দেওয়ার আশায় জমি জিরাত বন্ধক ও দায়দেনা করে ওই চক্রটির হাতে নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে দেন মেয়ের বাবা আজিজুর রহমান। ওই চক্রটি টাকা নেওয়ার পর কৃষক পরিবারের শিক্ষিতা ওই যুবতিকে চাকুরী না দিয়ে বরং টাকা আত্মসাতের জন্য প্রতারনার আশ্রয় গ্রহন করার, বাধ্য হয়ে মেয়ের বাবা তাদের কাছে প্রদানকৃত টাকা ফেরতের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবী করে আসলেও কোন প্রকার গ্রাহ্য করছেনা ওই চক্রটি। একদিকে মেয়ের কোন চাকুরী হলোনা অন্যদিকে জমি জিরাত বন্ধক রেখে শূণ্য হওয়ায় কৃষক আজিজুর রহমান বিভিন্ন মহলে ধর্না দিচ্ছেন প্রদানকৃত টাকা ফেরতের জন্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় এরকম ভূক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় ২০/২৫জন। তারা ওই চক্রের কোন না কোন সদস্যের হাতে জিম্মি। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ সকল চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে বলে মনে করেন এলাকার সূধী মহল। না হলে এ উপজেলার অনেক কৃষক পরিবারের শিক্ষিত যুবক হতাশা গ্রস্ত হয়ে বিপথ গামীও হতে পারে বলে ধারনা করছে কেউ কেউ।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend