প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্যও ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী

nahidaপাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এ জন্য আইন সংশোধন করছে সরকার।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সভার এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতও কাজ করবে। পাবলিক পরীক্ষায় ৩২ সেট প্রশ্ন তৈরি করা হবে। তাই প্রশ্ন যদি ফাঁসও হয়, তারপরও শিক্ষার্থীদের বইয়ের সবকিছু পড়তে হবে। বর্তমানে পাবলিক পরীক্ষার জন্য চার সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়। কিন্তু ছাপা হয় দুই সেট। এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বেশিসংখ্যক প্রশ্নপত্রের সেট করে সেখান থেকে পরীক্ষার দিন সকালে লটারির মাধ্যমে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা নির্ধারণের সুপারিশ করেছিল।

পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ালেও মোবাইল কোর্টে তাৎক্ষণিক শাস্তির বিধান রেখে প্রশ্ন ফাঁসের আইনটি আরো উন্নত ও কঠোর করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। প্রশ্ন ফাঁসের একটি আইন থাকলেও সেখানে শাস্তির বিষয়টি যথেষ্ট নয়। ‘দ্য পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) ১৯৮০ আইন’- এ আগে ১০ বছর সাজা থাকলেও তা সংশোধন করে চার বছর সাজা করা হয়। বর্তমানে আইনটি দ্য পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) ১৯৮০ (অ্যামেন্ড ১৯৯২) আইন নামে পরিচিতি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। আগে প্রশ্ন ফাঁসের সাজা ১০ বছর ছিল। কেন কমিয়ে চার বছর করা হলো। আইনটির কেন প্রয়োগ নেই তা রহস্যজনক।

আইনটি আরো উন্নত ও কঠোর করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আইনে শাস্তি বাড়তে পারে, জরিমানা হতে পারে। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হতে পারে। মোবাইল কোর্ট তাৎক্ষণিক শাস্তি দেবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন হাতেনাতে পেলে, কেউ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলে যেমন- একটা প্রশ্ন বানিয়ে ফেসবুকে দিলে, সাজেশন আকারে দিলেও তাৎক্ষণিক শাস্তি পাবে। আইনটি ওয়েবসাইটে দিয়ে সকলের মতামত নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা স্থগিত করে নেতুন প্রশ্নে নেয়া হয়। অভিযোগ তদন্তে এ সংক্রান্ত কমিটি ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র ছাড়াও গণিতের প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পায়।

তদন্ত কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে দ্য পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) ১৯৮০ (অ্যামেন্ড ১৯৯২) আইনে বর্ণিত শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে কঠোরভাবে তা প্রয়োগ ও ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করে। আইন কঠোর করা ছাড়াও এবার প্রতিপত্রের ৩২ সেট প্রশ্ন তৈরি করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। বর্তমানে চার সেট প্রশ্ন ছাপা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেশি সেট প্রশ্ন থাকলে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে না কোন সেটে পরীক্ষা হবে। এবার শুধু উপজেলা ছাড়া আর কোথাও প্রশ্ন রাখা হবে না। ভল্টে একাধিক চাবিও থাকবে, যাতে কেউ একা খুলতে না পারে।

এবারের প্রশ্ন ফাঁসে কিছুটা মানসিক প্রভাব পড়লেও পরীক্ষার ফলাফলে কোন প্রভাব পড়েনি বলে দাবি করেন মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রী বলেন, যারা পরশ্রীকাতর তারা শিক্ষার উন্নয়নে বিভ্রান্ত ছড়ায়।সরকারকে কোন না কোনভাবে বেকায়দায় ফেলা, বিরুপ ধারণা সৃষ্টির জন্য প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন বোর্ড, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ছিলেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend