একরামুল হত্যায় যেভাবে ফিল্মি কায়দায় অংশ নেয় ৩০ ঘাতক

Chairman_0_1_0 (1)মঙ্গলবার ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হককে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে ৩০ জন ঘাতক ফিল্মি কায়দায় অংশ নেয়। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন  তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ার বাসা থেকে ফুলগাজী যাওয়ার পথে বিলাসী সিনেমা হলের সামনে গুলি ও বোমা ফাটিয়ে অন্তত ৩০ জন দুষ্কৃতি তার ব্যক্তিগত প্রাডো গাড়ি গতিরোধের চেষ্টা চালায়। গুলি-বোমা এড়িয়েও একরামুলকে বহনকারী গাড়িটি এগিয়ে যেতে থাকলে একটি ট্রাক্টর দিয়ে গতিরোধের চেষ্টা চলে। কিন্তু ট্রাক্টরকে ধাক্কা দিয়ে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় একরামুলের গাড়িটি রোড ডিভাইডারে আটকে পড়ে। এ সময়ই দুষ্কৃতকারীরা প্রাডো গাড়িটি ঘিরে দাঁড়ায়। তারা ঢিল ও বোমা মেরে গাড়ির গ্লাস ভেঙে একরামুলের মাথায় ঠেকিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। আরও কয়েক দুর্বৃত্ত গাড়ির ভিতরে ঢুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত করে। এরপর ভিতরে লাশ পড়ে থাকাবস্থায় বাইরে থেকে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ৩০/৩৫ জনের দুর্বৃত্ত দল একটি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটালো অথচ একজনকেও চেনা যাবে না-এটা অবিশ্বাস্য। স্থানীয় সূত্রগুলোও জানিয়েছে, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ দুর্বৃত্তর মুখ অচেনা। তবে তাদের সহযোগী হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ের যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করা কঠিন নয় মোটেও।

পত্রিকাটি আরো জানায়, ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা একরামুল হক একরাম হত্যাকান্ডের পেছনে ‘নির্বাচনী লড়াইয়ে’ অংশ নেয়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথীর দিকেই দৃষ্টি রয়েছে আইন শৃংখলা বাহিনীর। ফেনীর গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বি ধনাঢ্য এক ব্যবসায়ি প্রার্থী নির্বাচনের আগে-পরে একরামকে কয়েক দফা হত্যার চেষ্টা চালায়। একাধিকবার তাকে লক্ষ্র করে গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিবারই জনপ্রিয় নেতা ও পর পর দুইবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম প্রাণে রক্ষা পেয়ে যান। কিন্তু ঘাতকদের পরিকল্পিত হামলার মুখে শেষযাত্রায় আর তার জীবন বাঁচেনি। গতকাল হত্যাকান্ডের পর থেকেই একরাম সমর্থকদের মুখে মুখে এসব কথা ফিরেছে। তার ভক্ত সমর্থক ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ কর্মিরা হামলা চালায় বিএনপি নেতা মাহাতাব চৌধুরী মিনারের বাড়িতে। তিনি সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একরামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনার হচ্ছেন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আহবায়ক।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend