খালেদা র‌্যাবকে ব্যবহার করতে না পেরে বন্ধের কথা বলছেন

531b7050733e9-Untitled-4প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া আগে র‌্যাব দিয়ে মানুষ হত্যা করতেন। এখন আর সেই কাজে র‌্যাবকে ব্যবহার করতে পারছেন না বলে এই বাহিনী বন্ধের কথা বলছেন।
আজ বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
সম্প্রতি খালেদা জিয়া র‌্যাবকে বিলুপ্ত করা না হলে আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
খালেদা জিয়ার এই হুঁশিয়ারির কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যখন র‌্যাব দিয়ে বিএনপির নেত্রী হত্যা করতেন, তখন ভালো ছিল। অপারেশন ক্লিনহার্টে হত্যা করে দায়মুক্তি দিয়েছিলেন। এখন ব্যবহার করতে পারছেন না। এ জন্যেই র‌্যাব বন্ধের কথা বলছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় বিচারপতি সায়েমকে সরিয়ে সংবিধান ও সামরিক আইন-বিধি অমান্য করে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। জিয়ার শাসনামলে ১৯ বার ক্যু হয়। সেনাবাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। প্রশ্ন আসে, তাহলে কি জিয়া যেভাবে হত্যা করেছে, তার কারণে কি পুরো সেনাবাহিনী বাতিল হয়ে যাবে? পুলিশের কারও অপরাধে পুরো বাহিনী বিলুপ্ত হবে?

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় আদালতে করা রিট ও এ-সংক্রান্ত নির্দেশনার কারণে কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, তখনই কিছু মানুষের অতি উৎসাহ কর্মকাণ্ড এই কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। কথায় কথায় রিট হয়, অর্ডার আসে। যে কাজটি নির্বাহী বিভাগের, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর করার কথা, সে কাজটি যদি বিচার বিভাগ করে দেয়, তাহলে আমাদের কী করণীয় থাকে? মনে হয় যেন আমাদের হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়েছে—এ রকম একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। কেউ অতি উৎসাহী হয়ে কাজ করলে অসুবিধা হয়৷ সবাইকে এটা বুঝতে হবে। অতি উৎসাহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে অপরাধীরা সজাগ হয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
সাত খুনের বিচার সম্পন্ন করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কখনোই অন্যায় প্রশ্রয় দেইনি, ভবিষ্যতেও দেব না। সাত খুনে যারা জড়িত, তারা যাবে কোথায়? যে যেখানে থাক, খুঁজে বের করব। শাস্তি দেব। কখন, কোন পন্থায় যেতে হবে, কী করতে হবে, আমার ভালোভাবে জানা আছে।’
কারও উৎসাহে নয়, নিজ থেকেই সব করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতেও নেব। সে কী, কার আত্মীয়—এটা দেখছি না। যে অন্যায় করবে, তার বিচার হবে।’
নূর হোসেন আওয়ামী লীগের বাইরের লোক—এমন ইঙ্গিত দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাত খুনের শিকার সবাই আওয়ামী লীগের লোক। আসামি যিনি, তিনি বিএনপির সৃষ্টি। জাতীয় পার্টিতেও ছিল। কিছু লোক আছে সব সময় সরকার পার্টি। এরা ক্ষতিকারক।’ এরা যেন দলে না আসতে পারে সেই পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীও (মায়া) উপস্থিত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ তাঁর মেয়ের জামাই। সাত খুনের ঘটনার পর মায়া গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাননি। তিনি দাবি করেছিলেন অসুস্থতার কারণে যোগ দেননি।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend