মানবতাবিরোধী অপরাধ: জব্বারের আমৃত্যু কারাদণ্ড

JABBAR-verdict-(24.02.15)-1মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে ১৪২ পৃষ্ঠার রায় সারসংক্ষেপ আকারে পড়া হয়।
আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে আনীত পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
আদালত রায়ের আদেশে জব্বারকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেয়ার কথা উল্লেখ করে বয়স বিবেচনায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদানের কথা বলেন।
আদালত বলেন, এ সকল অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডই তার উপযুক্ত শাস্তি। তবে তার বয়স যেহেতু বেশি, তাই বয়সের বিবেচনা করে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হল।
একই সঙ্গে জব্বারের বিরুদ্ধে আনীত চতুর্থ অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামী আব্দুল জব্বার পলাতক থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
তার বিরুদ্ধে আনা ৫টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। বয়স বিবেচনায় তার আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে বলেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন- চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, জাহিদ ইমাম, রিজিয়া সুলতানা চমন প্রমুখ।
সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বরে উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে সিএভিতে রাখা হয়।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। জব্বারের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আবুল হাসান।
রাষ্ট্রপক্ষের শেষ ও ২৪তম সাক্ষী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) হেলাল উদ্দিনকে আসামীপক্ষের জেরা শেষ করার মধ্য দিয়ে গত ১৭ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
পলাতক দেখিয়ে জব্বারের বিরুদ্ধে গত ১৪ আগস্ট অভিযোগ গঠন করা হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর আগে ৮ জুলাই ট্রাইব্যুনালের এক আদেশে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জব্বারকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও হাজির হননি জব্বার। এ জন্য তাকে পলাতক ঘোষণা করা হল।
এর পর আইনজীবী আবুল হাসানকে জব্বারের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য রাষ্ট্র নিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।
গত ১২ মে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনীত পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক দেখিয়ে আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, মঈন উদ্দিন-আশরাফুজ্জামান খান এবং জাহিদ হোসেন খোকনের রায় দেওয়া হয়েছে।
এই তিনজনকেই ফাঁসির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend