গয়েশ্বরকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ খালেদার সরকারপ্রধানের কাছে ক্ষমতালিপ্সা দেশের চেয়েও প্রিয়

30359_khaleda-280x160বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সব দেখে শুনে মনে হয়, এই সন্ত্রাসী দুঃশাসনের প্রধান মুখপাত্র হচ্ছেন স্বয়ং বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান। তার কাছে অহম ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা দায়ের, বাসায় তল্লাশীর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে শুক্রবার চেয়ারপারসন বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার এখন শেষ মরণকামড় দেয়ার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ণের তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে। কারণ ক্ষমতা জবরদখলকারী এই অবৈধ সরকার কোনোভাবেই জনগণকে কাছে টানতে না পেরে বিভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে। সেই প্রতিহিংসার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটল গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়াও গতকাল রাতে গ্রেফতারের উদ্দেশে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশীকে এই অবৈধ সরকারের দুর্বৃত্তায়িত চরিত্রেরই পুনরাবৃত্তি বলে বিএনপি চেয়ারপারসন উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় সংসদ দখল করে, জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে মনে করেছিল চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতার রাজদণ্ড ধরে রাখবে। আর এ জন্য তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নিজেদের অঙ্গসংগঠনগুলোকে দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত করে তাদের সর্বনাশা আশকারা দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে দমনে ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিরোধী দলকে পর্যুদস্ত করার জন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অবৈধ আওয়ামী সরকারের প্রিয়জনদের দিয়ে সাজিয়ে সব ধরনের হিংসাত্মক অপতৎপরতা চলমান রাখা হয়েছে। আর সে জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা আর নির্বিচারে গ্রেফতার করতে এই অবৈধ আওয়ামী সরকারের জনপ্রশাসন অত্যন্ত পারঙ্গম। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জনগণকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না।
চেয়ারপারসন বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন ভয়াবহ সঙ্কটের মুখে। সাজানো প্রশাসন ও দুষ্কৃতকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের পাণ্ডাদের দিয়েই এই ভোটারবিহীন সরকার গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যার পথ ধরে জনগণের প্রতিবাদী স্বরকে থামাতে অপচেষ্টা করা, বিরুদ্ধ মত পেশের কোনো জায়গা না রাখা এবং রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর অত্যাচার ও জুলুম অব্যাহত রেখেছে। আর এভাবে নিজেদের মসনদ গায়ের জোরে ধরে রাখতে তারা মূলত দেশের জনগণকেই পরাধীন করে রেখেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর আমার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র পাণ্ডারা যেভাবে পৈশাচিক হামলা করে তাতে মনে হয়, এই অবৈধ সরকার এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে তারা মূলত জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, একদলীয় অপশাসনের শৃঙ্খলে গোটা দেশকেই বন্দীশালায় পরিণত করা হয়েছে। উদ্বেল মিছিলে মিছিলে সংগ্রামী জনগণ এখন শৃঙ্খল ভেঙে এই অবৈধ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাবিলাসের যবনিকাপাত ঘটাতে ধেয়ে আসছে।
বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত আক্রমণের ঘটনায় জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান ও ইসাহাক সরকারসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend