জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন

Cable_TVজাতীয় সম্প্রচার আইন ও জাতীয় সম্প্রচার কমিশন আইন প্রণয়নে ৩৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রহমানকে প্রধান করে এই কমিটি করা হয়েছে।

এতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিশিষ্টজন ছাড়াও এ্যাডভোকেট, বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ, নাট্যব্যক্তিত্বসহ সকল ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের রাখা হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সম্প্রচার) মোহাম্মদ আবুল হোসেন। জাতীয় সম্প্রচার আইনের জন্য দুই মাস এবং জাতীয় সম্প্রচার কমিশন আইনের জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।

কি আছে নীতিমালাতে
সদ্য অনুমোদন হওয়া নীতিমালায় ৭ টি অধ্যায় রয়েছে।

প্রথম অধ্যায়ে পটভূমি, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও নীতিমালা বাস্তবায়নের কৌশল উল্লেখ রয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে সম্প্রচার লাইসেন্স প্রদান ও পদ্ধতি এবং সম্প্রচার কমিশনের ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারের বিষয়ে বলা হয়েছে তৃতীয় অধ্যায়ে। কী কী বিষয় অনুসরণ করে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে, সে বিষয়ে বলা হয়েছে চতুর্থ অধ্যায়ে। পঞ্চম অধ্যায়ে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে আরো কিছু বিবেচ্য বিষয়ের কথা বলা হয়েছে। কোন কোন বিষয় সম্প্রচার করা যাবে না, করা সমীচীন হবে না, তার উল্লেখ রয়েছে এখানে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে সম্প্রচার কমিশন সম্পর্কে বলা হয়েছে। কমিশন গঠন, আইনি কাঠামো, দায়িত্ব, কাজের পদ্ধতি, কী কী অভিযোগ কমিশন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করবে এ বিষয়গুলো এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে সম্প্রচার কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত কিভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হবে সে বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়।

সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী সম্প্রচার করা যাবে না বা সম্প্রচারের সময় কঠোরভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে এমন অন্যতম নীতি হচ্ছে –

– সশস্ত্র বাহিনী বা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, অবমাননা বা বিদ্রৃপ করে কিছু প্রচার করা যাবে না বা তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা যাবে না।
– রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে- এমন সামরিক, বেসামরিক ও সরকারি তথ্য প্রচার করা যাবে না। জাতীয় আদর্শ ও উদ্দেশ্যের প্রতি ব্যঙ্গ-বিদ্রৃপ করা, জনগণের প্রতি অবমাননা, স্বাধীন অখণ্ড বাংলাদেশের সংহতি ক্ষুণ্ন হতে পারে- এমন বক্তব্য প্রচার করা যাবে না, যাতে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে।
– বিভিন্ন শ্রেণি ও ধর্মের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে পারে বা ধর্মের প্রতি অবমাননা হয়- এমন কিছু প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। ব্যক্তির গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন করে- এমন কিছু প্রচার করা যাবে না।
– রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে কিংবা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আঘাত করতে পারে, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রতি উৎসাহ সৃষ্টি করতে পারো- এমন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।
– কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের অনুকূলে যায়, যাতে অন্য কোনো বিদেশি রাষ্ট্র আঘাত পায় কিংবা যাতে বন্ধুভাবাপন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সে রকম কিছু প্রচারে বিধি-নিষেধ রয়েছে।
– কোনো জনগোষ্ঠী বা জাতির জন্য ক্ষতিকর দৃশ্য প্রচার করা যাবে না। জনস্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে- এমন কোনো বিদ্রোহ, নৈরাজ্য, হিংসাত্মক ঘটনা প্রদর্শন পরিহার করতে হবে।
– দুর্নীতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উৎসাহ প্রদান করে- এমন কিছু প্রচার করা যাবে না।
– অনুষ্ঠান বা বিজ্ঞাপন দেশের প্রচলিত আইন, রীতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend