মুন্সীগঞ্জে লঞ্চডুবি: লাশের সংখ্যা ৪৫; ৩৩ ঘণ্টায় উদ্ধার হলো এমভি মিরাজ

image_91433_0মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ডুবে যাওয়ার সাড়ে ৪০ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে এমভি মিরাজ-৪।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘৩৩ ঘণ্টা পরে লঞ্চটিকে উদ্ধার করতে পেরেছি। আরও আগে উদ্ধার করা যেতো। লঞ্চটি একটি গর্তে পড়ে যাওয়ায় এতো দেরি হয়েছে। এরমধ্যে দুই দফা লিভ স্লিপ করে বেরিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লঞ্চটি উল্টে যাওয়ায় এটাকে উদ্ধার আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সবার সহযোগিতায় সেটা করতে পেরেছি।’

এ এলাকাকে ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া এখানে নদী থেকে প্রায়ই মাটি চুরি করা হয়। এজন্য নদীতে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এটি বন্ধ করতে হবে।’

ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও বালুর মহাল ইজারা দেয়া বন্ধের জন্য উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলেও জানান ড. শামসুদ্দোহা।

উদ্ধারের সময় পানিসহ লঞ্চটির ওজন ছিলো ২২০ মেট্রিক টন ও পানি ছাড়া ওজন ছিলো ১৬০ মেট্রিক টন। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক আরিফ উদ্দিন বাংলামেইলকে এ তথ্য দেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে লঞ্চটিকে চ্যানেল থেকে সরিয়ে দেয়া। এখন আমরা এটিকে জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেব। বাকিটা তাদের কাজ।’

শুক্রবার বেলা ৩টায় ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যাওয়ার পথে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। সেদিন সন্ধ্যায় উদ্ধারকাজে নিয়ে আনা হয় উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। এটিকে সহযোগিতা করেছে অন্য দুটি জাহাজ দুরন্ত ও দুর্বার।

শুক্রবার উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের ক্রেনের তার দুই দফা ছিঁড়ে যায়। এতে উদ্ধারকাজে ব্যাপক দেরি হয়। বেলা ৩টার দিকে লঞ্চের একটি অংশ দেখা যায়। তখন অপেক্ষমান স্বজনদের মাঝে আশার আলো সঞ্চার হয়। কিন্তু এ অবস্থায় দীর্ঘ সময় থাকায় স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

শনিবার ভোর পর্যন্ত ওই অংশই দেখা যায়। সকালের দিকে আরও একটু অংশ ভাসিয়ে তোলে প্রত্যয়। অবশেষে সকাল সাড়ে ৭টায় পুরোপুরি উদ্ধার করা হয় লঞ্চটিকে।

সকাল ৮টা ১০ মিনিটে তীরে ভেড়ানো হয় লঞ্চটিকে। পানি কম থাকায় একবারে তীরে আনা সম্ভব হয়নি।
এ পর্যন্ত এ লঞ্চ থেকে ৪৫টি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ৪১টি তাদের স্বজনরা শনাক্ত করে নিয়ে গেছে। বাকি ৪টি অজ্ঞাত। এছাড়া লঞ্চ ডোবার পরে ৪০ জন জীবিত উদ্ধার ও ৮ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় এমভি-মিরাজ-৪।

লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাচ্ছিল।
লঞ্চটিতে প্রায় তিনশ যাত্রী ছিল বলে ধারণা করা হয়।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend