Uncategorized ছবি ঘর জেলার খবর দেশ ময়মনসিংহ লিড নিউজ শেরপুর শ্রীবরদীর খবর 

শ্রীবরদীতে ভাইদের ফাঁসাতে নিজ বসত ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুরের শ্রীবরদীতে আপন ভাইদের ফাঁসাতে নিজ বসত ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়নের ঢনঢনিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় বসত ঘরের মালিক বাবুল মিয়ার স্ত্রী কুকুলা বেগম বাদী হয়ে বাবুলের সহোদর ২ ভাইসহ ৫ জনকে আসামী করে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এনিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগি পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পৈত্রিক সম্পত্তির অংশীদারিত্ব নিয়ে ঢনঢনিয়া গ্রামের মৃত কহেজ উদ্দিনের ছেলে বাবুল মিয়া ও বাদল মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি দুলাল মিয়া নিজের অংশের ২.৭৫ শতাংশ জমি অন্যত্র বিক্রি করে। এতে বাবুল মিয়া বাদল মিয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে বাবুল মিয়া সহোদর ভাইদের ফাঁসাতে ১০ মার্চ দিবাগত রাতে নিজ বসত ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। পরে বাবুল মিয়ার স্ত্রী বাদী হয়ে বাবুলের সহোদর ভাই বাদল মিয়া, নুর ইসলাম গুডি, চাচাতো ভাই দুলাল মিয়া, ফারুক ওরফে ফকির, ভাতিজা শান্ত মিয়াকে আসামী করে ১৩ মার্চ শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে বাবুল মিয়ার মা পাংখা বেগম (৭৫) বলেন, বাবুলের স্ত্রী কুকুলা বেগম নিজেই ঘরে আগুন দিয়েছে। এতে আমার অন্য কোনো ছেলে জড়িত নয়। বাবুল মিয়ার বড় ভাই নুর ইসলাম গুডি জানান, আমি পৈত্রিক বসত ভিটা ছেড়ে অনেক আগেই প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে বাড়ি করেছি। আগুন লাগার খবর পেয়ে রাতেই আমি এসে দেখি আমার ভাই বাবুল ও তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে। পরে আমি আগুন নিভানোর কাজে সহযোগিতা করি। কিন্তু এঘটনায় আমার নামেও মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে। বাদল মিয়া বলেন, আমার ভাগের পৈত্রিক সম্পত্তি ঘটনার ২০ দিন আগে ২.৭৫ শতাংশ জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিলে বাবুল মিয়া আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয় এবং আমার সাথে ঝগড়া ঝাটি করে নিজের ঘরে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে লোকজন তাকে ফিরফার করে। এরই জের ধরে আমাকে ফাঁসানোর জন্য পুর্ব পরিকল্পিতভাবে নিজ বসত ঘরে আগুন দিয়ে আমাকেসহ আমার ভাই-ভাতিজার নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করতেছে। এছাড়া বাবুল মিয়ার ঘরটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য কাঠ চিড়াই করে এনেছে এবং ঘরের আসবাবপত্র ও টেলিভিশন অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। চাচাতো ভাই ফারুক ওরফে ফকির বলেন, রাত আনুমানিক ২টার দিকে আগুন লাগার চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে আসি। এসময় দেখি বাবুল ও তার স্ত্রী আগুন আগুন বলে চিৎকার করছে। পরে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোয়াল ঘর থেকে বাবুলের গরু বের করে আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করি। আমাদের ফাঁসাতে মুলত বাবুল ও বাবুলের স্ত্রী নিজেদের ঘরে আগুন লাগিয়েছে। এলাকাবাসি আব্দুল গফুর জানান, আগুন লাগার ডাক-চিৎকার শুনে এসে দেখি, বাবুল ও তার স্ত্রী শুধু চিৎকার করছে আর বাড়ির অন্যরা আগুন নিভানোর কাজে সহযোগিতা করছে।
এব্যপারে বাবুল মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, শুনেছি গতকাল বাড়িতে সাংবাদিক এসেছিল। আমার মা সাংবাদিকদের সাথে উল্টা-পাল্টা কথা বলেছে। আমার ভাইয়েরা ষড়যন্ত্র করে মাকে দিয়ে আমার স্ত্রীর নামে আগুন লাগানোর কথা বলেছে।
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, বাবুলের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দিয়েছে। মামলাটি রজু হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Related posts

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend