চায়নাদের সস্তা প্রযুক্তি আমাদের দুর্গতি: প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ

চায়নাদের সস্তা প্রযুক্তি আমাদের দুর্গতি: প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ

কোন সম্প্রদায় বা গুষ্টি যদি নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনে তার প্রতিকার কি? আমার এই লেখায় অনেকেই সুচনা পড়ে কি মনে করবেন জানিনা। তবে এটাই বাস্তবতা। সময়ের পরিক্রমায় যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রযুক্তির ছোয়ায় অনেক কিছুই প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে তারই ধারাবাহিকতায় মানুষের চলাচলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। কয়েক দশক আগেও মানুষের চলাচল এবং পন্য পরিবহনের জন্য গরু গাড়ী, ঘোড়া ইত্যাদি ব্যবহার করলেও বর্তমানে স্বল্প দূরত্বের ব্যবধানে অনেকটা একচেটিয়া ভাবেই ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে করে মানুষের চলাচলের গতি বেড়ে গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমরা নিজেদেরকে যে কত বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি তা একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই সহজেই বোঝতে পারবো। প্রাথমিকভাবে এই সমস্ত গাড়িতে যে হেডলাইট লাগানো থাকে তার আলোর তীব্রতা স্বাভাবিক। কিন্তু এই গাড়ি গুলি কেনার পরেই চালকরা বেশিক্ষণ আলো পাওয়ার আশায় সচেতনতার অভাবে অরজিনাল হেডলাইট খুলে খুবই নিম্ন মানের সস্তা চায়না এল ই ডি লাইট সংযোজন করেন। এই এল ই ডি লাইট গুলি মানুষের চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং দীর্ঘ মেয়াদে চোখের দৃষ্টি শক্তি চির দিনের জন্য হারিয়ে ফেলে। মাত্র কয়েক সেকেন্ড চোখের উপড় পড়লেই কিছু সময়ের জন্য চোখ কিছুই দেখতে পায় না। এতে করে বিপরীত দিক থেকে আসা কোন গাড়ির চালক কিছুই দেখতে না পেয়ে অনুমান করে ইজিবাইক কে রাস্তা ঘাটে ক্রস করতে হয়। শুধুমাত্র এই নিম্ন মানের এল ই ডি লাইটের কারণে রাতের বেলায় সারাদেশে এসব গাড়ীতে বহু দুর্ঘটনা ঘটছে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে এবং অনেকেই পংগুত্ব বরন করছে। এসব ঘটনার জন্য আসলে দ্বায় কার? যাদের দ্বায় তারা সামান্য স্বার্থের জন্য নিশ্চুপ। কিন্তু ভুক্তভোগী সারাদেশের মানুষ। যদি কোন পরিবার তার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষিত করার ক্ষমতা না থাকে অন্তত পক্ষে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। যদি তাও সম্ভব না হয় মিনিমাম নিজের নাম লেখাটি শেখানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। এই যে সারা বাংলাদেশে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ( বি আর টি এর তথ্য অনুযায়ী) ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলছে। তাদের সব চালক কে সরকারি ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আওতায় নিয়ে আসতে না পারলেও অন্তত পক্ষে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ১ মাস অথবা ১ সপ্তাহ অথবা ১ দিনের কোন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা কি করতে পারে না? রাস্তায় গাড়ি চালাতে যে নুন্যতম সচেতনতা ও মিনিমাম নিয়ম কানুন জানা প্রয়োজন সেগুলো কি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, অথবা জেলা পরিষদ ব্যবস্থা করতে পারে না? এই সবগুলো গাড়ি এবং চালক আমাদের দেশের। তারা সচেতন হলে তো এই দেশের ১৬ কোটি মানুষ উপকৃত হবে। একটা দুর্ঘটনা কোন কোন পরিবারের সারাজীবনের কান্না। এটা তো নিজ উদ্যোগে কোন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগনও নিতে পারেন। এতে করে সারাদেশের মানুষ  উপকৃত হবে। স্পেসিফিক কোন উপজেলা চেয়ারম্যান যদি এমন উদ্যোগ নেন যে তার উপজেলায় যেসব গাড়ীতে নিম্ন মানের চায়না এল ই ডি লাইট লাগানো থাকবে তাদের প্রবেশ করতে অথবা চলতে দেওয়া হবে না এবং পাশাপাশি সেই উপজেলা পরিষদ কর্তৃক এসব ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ৩ দিন অথবা ১ দিনের হাতে কলমে ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। এটাই হয়তো একটা মডেল হতে পারে। এটা দেখেই বাকি উপজেলা,জেলা, ইউনিয়ন পরিষদ শিক্ষা নিবে। এতে করে এই দেশের ১৬ কোটি মানুষ উপকৃত হবে। প্রতিদিন হাজার হাজার সড়ক দুর্ঘটনা থেকে বেচে যাবে। হয়তো অনেক পরিবারের শেষ সহায় সম্বল হারাতে হবে না। মানুষের চোখ ক্ষতিকর এল ই ডি লাইট থেকে রক্ষা পাবেন।

প্রকৌশলী এম মোকাদ্দেছ বিল্লাহ (কাওছার)
এম ৪০৫৫৭.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend