করমজলে ৫০টি ডিম দিয়েছে জুলিয়েট

16.05.201সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের কুমির জুলিয়েট এবারও ৫০টি ডিম দিয়েছে। অভিজ্ঞ লোকবলের অভাবে ডিম নষ্ট হয়ে বাচ্চা ফোটার সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, কেন্দ্রের পুকুরপাড়ে মঙ্গলবার কুমির জুলিয়েট ৫০টি ডিম দেয়। ওইদিনই ডিমগুলো সংগ্রহ করে ইনকিউবেটরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে রাখা হয়েছে। ৯০ থেকে ৯১ দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে। গত বছরও জুলিয়েট ৪৪টি ডিম দিয়েছিল। এর মধ্যে বাচ্চা ফোটে ৩১টি।
এদিকে, বাচ্চা ফোটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কেন্দ্রের লোকজন। কারণ দীর্ঘদিন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আ. রব চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি চাকরি থেকে অবসরে গেছেন। এরপর থেকে এই কেন্দ্রের পরিচর্যা ও বন্যপ্রাণী রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে অভিজ্ঞ কাউকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
বর্তমানে কুমিরের ডিম সংগ্রহ ও অস্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্ব পালন করছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার ফরেস্টার আজাদ কবির।
তিনি বলেন, ‘আমাকে স্থায়ীভাবে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালে এই কেন্দ্রে কাজ করেছি বিধায় আমাকে মাঝেমধ্যে দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থায়ীভাবে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি না রাখলে প্রজননকেন্দ্রের কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ ছাড়া কুমিরের ডিম নষ্ট হয়ে বাচ্চা ফোটার সংখ্যাও কমে যেতে পারে।’
এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘কুমিরের ডিম সংগ্রহ ও বাচ্চা ফোটাতে তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। কারণ আমাদের স্টাফ জাকির দীর্ঘদিন কাজ করছেন। আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনি মুখে বলতেন, আর জাকির কাজ করতেন। সুতরাং জাকির তো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েই আছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রজননকেন্দ্রের কয়েকজন স্টাফ জানান, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোক না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ইতোমধ্যে কেন্দ্রের কুমিরসহ অন্য প্রাণীগুলো রোগাক্রান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২০২টি কুমির রয়েছে। এ ছাড়া বিগত বছরগুলোতে এই কেন্দ্রের ৭০টি প্রাপ্তবয়স্ক কুমির সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে অবমুক্ত করা হয়েছে। ২০০৫ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল এলাকায় গড়ে ওঠে দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী ও কুমিরর প্রজননকেন্দ্র। রোমিও ও জুলিয়েট নামে দুটি কুমির নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এ কেন্দ্রের।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend