৫ জেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু

Bojropat

দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুরে দুইজন, মাগুরার দুইজন, রাজবাড়ীতে দেবর-ভাবী, ঝিনাইদহে দুইজন ও চাপাইনবাবগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত—

গাজীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃতরা হলেন- স্থানীয় বেলদিয়া গ্রামের মিয়ার উদ্দিনের ছেলে কৃষক নছর উদ্দিন (৫৫) ও টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকার আহাম্মদ আলীর ছেলে সফির উদ্দিন (৩৫)।

আহতরা হলেন- মধুপুর এলাকার ধানকাটা শ্রমিক মো. শাহজাহান (৩৫), আহাম্মদ আলী (৪৫) ও রজব আলী (৩৫)।

স্থানীয় বেলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম রাজু জানান, বেলদিয়া গ্রামের নছর উদ্দিন তার জমিতে শ্রমিকদের জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। পরে ধানক্ষেতের পাশেই বসে পাঁচজন একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তারা সবাই আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কাওরাইদ নিউলাইফ ডায়াবেটিক সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নছর উদ্দিন ও সফির উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শারমিন জেরিন জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নছর উদ্দিনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. মোতালিব জানান, বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে একজন এবং হাসপাতালে আনার পথে অপরজন মারা যান।

মাগুরা : মাগুরায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নারীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বিকট শব্দে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

মৃতরা হলেন— সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মলিন হোসেন (২৫), আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের সিনবাদ মিয়া (২২) । বজ্রপাতে আহতরা হলেন— পারলা গ্রামের নইম মল্লিক (১৭), কুশাবাড়িয়ার বিল্লাল হোসেন (২১), নওশের আলী (৪৩), সুমন হোসেন (২৫) ও চরচাপাতলার সালমা খাতুন (২৫)। আহতরা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাকিবুল ইসলাম বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এছাড়া আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রাজবাড়ী : জেলা সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় নূরপুর গ্রামে বজ্রপাতে দেবর ও ভাবীর মৃত্যু হয়েছে।

মৃতরা হলেন, ঐ গ্রামের আবুল বাশার শেখের ছেলে কোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র রুবেল শেখ (১৫) ও তার বড় ভাবী পারভিন বেগম (১৮)।

গ্রামবাসী মাজেদ তালুকদার জানান, সন্ধ্যায় দেবর ও ভাবী বাড়ির বারান্দায় বসেছিল। হঠাৎ আকাশে বজ্রপাত হলে তারা দুইজন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

বসন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একএম সফিউদ্দিন আহম্মেদ কাশেম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৯ জন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচন্ড বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের আওয়াল সরকারের ছেলে কৃষক ইবাদুল্লাহ (৩৫) ও শৈলকুপা উপজেলার কুমারিদহ গ্রামের মৃত মোজাহার শেখের ছেলে ইমতিয়াজ আলী (৭০)।

ঝিনাইদহ সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল ও সদরের হরিশংকরপুর ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রচন্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। রাত ৮টার দিকে বজ্রপাত চলাকালে শৈলকুপা উপজেলার ইমতিয়াজ আলী নামের এক বৃদ্ধ বাড়ির সামনে গাছের নিচেই দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

অপরদিকে জেলার সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক ইবাদুল্লাহ রাত সাড়ে ৮টার দিকে বজ্রপাতের সময় গাছের আম কুড়াতে গেলে বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এছাড়া ঝিনাইদহ সদর, শৈলকুপা, হরিনাকুন্ডু ও কোটচাদপুর উপজেলায় বজ্রপাতের ঘটনায় ৯ জন আহত হয়েছে। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের নাম পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।বাকি আহতরা হলেন- ডালিয়া (২৫), জহুরুল (৩৫), অন্তরা বিশ্বাস (২৩), ফাহিমা বেগম (৪০), মনি খাতুন ( ৩০) ও আব্দুল আজিজ (২৪)। আহতদের অবস্থা আশংকামুক্ত বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমুল কবির জানিয়েছেন।

চাপাইনবাবগঞ্জ : বজ্রপাতে চাপাইনবাবগঞ্জে সানোয়ার (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে।

জানা গেছে, ধানক্ষেতে কাজ করার সময়সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বজ্রপাতের ঘটনায় তিনি মারা যান। তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়গাছি গ্রামের সাদিকুল ইসলামের পুত্র।

ভোলাহাট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন বজ্রপাতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি নিশ্চিত করেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend