মাত্র ৫০০ টাকায় শিশু বিক্রি
জেলার হাতীবান্ধায় মাত্র ৫০০ টাকায় শিশু বিক্রি করেছে এক নারী। শিশুকে কেনাবেচার এ ঘটনা ঘটেছে হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ গড্ডিমারী গ্রামে।
মাত্র ১৮ মাস বয়সী শিশুটির নতুন নাম রাখা হয়েছে মিনা। মাত্র দু’দিন আগে এক নারী ভিক্ষুক মাত্র ৫০০ টাকায় বিক্রি করে গেছে ওই ফুটফুটে শিশুটিকে। কিন্তু যিনি বিক্রি করেছেন তার নাম কেউ বলতে না পারলেও বাড়ি ফেনী জেলায় বলে জানিয়েছেন শিশুটির নতুন বাবা ঈমান আলী (৩২)।
ঘটনাস্থলে গিয়ে সোমবার দুপুরে দেখা যায়, শিশুটি বাড়ির উঠানে খেলা করছে। কখনও হাসছে আবার কখনও কাঁদছে। তবে এই হাসি-কান্নার মাঝেই প্রায় নিজের সন্তানের মতো করে বড় করার স্বপ্ন আঁকছে তার নতুন বাবা-মা।
বর্তমান বাবা ঈমান আলী বলেন, ‘গত শনিবার এলাকার ভিক্ষুক মজিবরের সঙ্গে শিশুটিকে নিয়ে এসেছিল তার মা। তারা প্রথমে রবিউল নামে স্থানীয় এক শুঁটকি ব্যবসায়ীর কাছে মেয়েটিকে রাখার কথা বলে। বিষয়টি জেনে আমিই প্রস্তাব রাখি শিশুটিকে লালন-পালন করে নিজের সন্তানের মতো বড় করার। কারণ আমার ঘরে দু’টি ছেলে সন্তান থাকলেও কোনো মেয়ে সন্তান নেই। অবশেষে শিশুটিকে আমার কাছেই রেখে যায় তার মা।’ তবে যাওয়ার সময় ওই মহিলাকে শিশুটির বিনিময়ে ৫০০ টাকা দেওয়া হয় বলে স্বীকার করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘শিশুটির প্রকৃত বাবা-মা’র নাম জানেন না। তবে শিশুটির মায়ের শরীর শুকনো। তার আরও একটি ছেলে আছে, বাড়ি ফেনী জেলায়। যাওয়ার সময় শিশুটির মা শুধু কেঁদে কেঁদে বলেছে তার স্বামী তাকে প্রচণ্ড অত্যাচার করে। সন্তানদের খাবার দেয় না। তাই ভিক্ষা করে সংসারের খাবার যোগায় সে। তবে কখনও এলে শিশুটিকে যেন একটু দেখতে দেওয়া হয়, এমন কথা বলেই চলে যায় ওই নারী।’
ওই এলাকার ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, একটি শিশুকে ৫০০ টাকায় বিক্রয়ের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে যাই। শিশুটির মায়ের নাম কেউ বলতে পারছে না। তবে তার বাড়ি ফেনী জেলায় বলে আমিও লোক মুখে শুনেছি। শিশুটি এখন তার নতুন ঠিকানায় বেশ আদর-যত্নে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই গ্রামের মজিবর (৪৫) বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ভিক্ষা করে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে সে অপরিচিত কোনো ভিক্ষুককে সঙ্গে করে নিয়ে আসে ওই গ্রামে। এবারও সে ওই শিশু ও তার মাকে গ্রামে এনেছিল বলে জানায় স্থানীয়রা।
তবে মজিবর ভিক্ষুকের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেশীরা জানান, গত শনিবার সে বিক্রি হওয়া ওই শিশুটির মায়ের সঙ্গে আবার বেরিয়ে গেছে। কবে নাগাদ ফিরবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কেউ।
