নাটোরে আদালত থেকে তিন অভিযুক্ত পলায়ন

Natoreনাটোরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে রবিবার দুপুরে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ মামলার তিন আসামি পালিয়ে গেছেন।
পলাতকরা হলেন- বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হেলেনা খাতুন এবং তার দুই সহযোগী নওগাঁ জেলার মান্দা থানার শ্রীরামপুর (সুতীহার) গ্রামের মুস্তাকিন সরদার ও তার ছেলে মোহাম্মদ রতন।
আদালত ও বাদীর আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের ইয়াহিয়া খানের ভাগ্নি তানিয়া খাতুনকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার জন্য লিখিতভাবে ১২ লাখ ৯১ হাজার টাকা গ্রহণ করেন অভিযুক্ত হেলেনাসহ তার দুই সহযোগী। হেলেনা খাতুন আসামি মুস্তাকিন সরদারকে এনায়েতপুর বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একজন পরিচালক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। পরবর্তীতে তানিয়াকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হলে বাদীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক টাকা ফেরত চাইলে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন হেলেনা। এঘটনায় বাদী এহিয়া খান চলতি বছরের ০৭ জানুয়ারি আদালতে মামলা করলে (মামলা নং সিআর ০১/১৫, ধারা, দঃ বিঃ ৫০৬/১১৪ ধারা) আদালতের বিচারক রবিবার অভিযুক্ত তিনজনকে আদালতে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক অভিযুক্ত হেলেনা খাতুন তার আইনজীবী মোখলেছুর রহমানের মাধ্যমে রবিবার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এসময় হেলেনার সাথে তার অপর দুই সহযোগী মোস্তাকিন ও রতন জামিনের আবেদন না করে সরাসরি এজলাসে উঠে পড়েন। আদালত মোস্তাকিন ও রতনকে কোন জিম্মাদার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করার আদেশ দেন। জামিনের আবেদন না করা পর্যন্ত কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ মোহাম্মদ জামালকে আদালত কক্ষের ভিতর হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়ে অন্য মামলা শুনানি শুরু করেন। এরমধ্যে অভিযুক্ত তিনজনই কৌশলে আদালত এলাকা থেকে পালিয়ে যান। মামলাটি পুনরায় ডাক পড়লে আইনজীবী মোখলেছুর রহমান মিলন আদালতের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে জানান, আসামিরা কৌশলে পালিয়ে গেছেন। ঘটনাটি শুনে আদালতের বিচারক আইনজীবী মোখলেছুর রহমানকে সতর্ক করে দিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও ৩০ মার্চের মধ্যে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার জয়ন্ত কুমার দাস বিচারকের নির্দেশে আদালতে ঘোষণা করেন যে, সমন পেয়েও আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
বাদীর আইনজীবী দীনেশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্তরা আদালত থেকে পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত হেলেনা খাতুন বিভিন্ন স্থানে চাকরি দেওয়ার নামে ও ঠিকাদারী কাজসহ বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেন। কাজ না হলে আসামিরা টাকা ফেরত চাইলে হেলেনা তাদের চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে হেলেনার হিসাব নম্বরে টাকা না থাকায় চেকগুলো ফেরত যায়। এভাবে ৫০ লাখ টাকা চেক ডিজনারের ঘটনায় হেলেনা খাতুনের বিরুদ্ধে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজসহ বিভিন্ন আদালতে তিনটি মামলা বিচারাধীন আছে।
এবিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার বাসুদেব বণিক জানান, তারা আদালত এলাকা থেকে দায়িত্বরত পুলিশের নজর এড়িয়ে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু তারা পুলিশ হেফাজতে ছিলেন না।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend