‘খাগড়াছড়িতে রেন্টিনা চাকমাকে নিলামে তোলা হচ্ছে’

RENTINA-CHAKMA---FEঅন্য ধর্মের লোককে বিয়ে করায় খাগড়াছড়িতে রেন্টিনা চাকমা নামের এক গৃহবধুকে নিলামে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। রেন্টিনা চাকমার প্রতি এ নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং তার সন্ধান দাবিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন রেন্টিনার স্বামী সৈকত ভদ্র।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্প্রসারিত মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার খানপুর গ্রামের সৈকত ভদ্র।
ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক সৈকত ভদ্র সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাংগঠনিক কাজের সুত্র ধরে ২০১০ সালে খাগড়াছড়ির খবংপড়িয়া গ্রামের বিমলকান্তি চাকমা ও শান্তি রানী চাকমার মেয়ে রেন্টিনা চাকমার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুত্রে দুজনের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই ভালবাসার পবিত্র বন্ধনকে চিরস্থায়ী করতে ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর বিশেষ বিবাহ আইনে আমরা বিয়ে করি। একই বছর ৫ জুন বিয়ে রেজিস্ট্রি করাই। কিন্তু রেন্টিনার বাবা-মা ও প্রতিবেশিরা এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় আমরা প্রতিকুল অবস্থার মুখে পড়ি। এ অবস্থায় ঢাকায় দাম্পত্য জীবনযাপন করতে থাকি।
সৈকত ভদ্র আরও জানান, তার শাশুড়ি শান্তি রানী চাকমা ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকায় তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। শন্তি রানী কৌশলে একই বছরের ৬ আগস্ট রাত ১১টায় খাগড়াছড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা বলে তাদেরকে নিয়ে ঢাকার শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক রেন্টিনাকে জোর করে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে নিয়ে রেন্টিনাকে জোর করে সৈকত চাকমা নামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। রেন্টিনা এই বিয়েতে আপত্তি জানায়। এ জন্য তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। মাস খানেক হল রেন্টিনার সঙ্গে আমার আর কোনো যোগাযোগ নেই।
ওই এলাকার লোকজন ও শ্বশুর বিমল চাকমার বরাতে সৈকত ভদ্র বলেন, ওই বিয়েতে অমত করায় আমার স্ত্রী রেন্টিনাকে এখন পহাড়ী রীতি অনুযায়ী নিলামে চড়ানোর তোড়জোড় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে ৯ আগস্ট যশোরের কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেট ভিকটিম রেন্টিনাকে উদ্ধারের জন্য সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
সৈকত ভদ্র বলেন, এখনো রেন্টিনা উদ্ধার হয়নি এবং তার ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। রেন্টিনাকে উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনের সময় সৈকত ভদ্রের বন্ধু নূরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিলন দেওয়ান বলেন, এখনকার ঘটনা তো জানি না। বছর খানেক আগে রেন্টিনার বিয়ের খবরটি জেনেছিলাম।
স্থানীয় সাংবাদিক সৈকত দেওয়ান বলেন, রেন্টিনার বাবা অনেক আগে তার মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। এরপর তো আর কোনো খবর জানি না।
এ বিষয়ে রেন্টিনার বাবা বিমল চাকমার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। রাত সাড়ে ১০টায় তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend