একটি মুরগী, একসঙ্গে ১৩ ডিম

habiganj-news-06.02.2015-2ছবি দেখে যে কেউ বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন। মাথায় বড় ঝুঁটি আর অবয়ব দেখে হয়তো ভাবছেন এটি মোরগ। সত্যিই কি তাই! না। আসলে এটি একটি মুরগী।
শারীরিক অবয়বের মতো এর ডিম পাড়ার ক্ষমতাও অবিশ্বাস্য! শুনলে বিশ্বাসই করতে চাইবেন না কেউ। তারপরেও বিশ্বাস করতেই হবে। কারণ, একদিনে পর পর ১৩টি ডিম পেড়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে এই মুরগিটি।
আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই মুরগিটির মালিক হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের সৈয়দ মাইনুল হক আরিফ। তার বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদুল হক।
আরিফ জানান, গেল বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মুরগিটি প্রতিদিন তিনটি করে ডিম দিতে থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছর ৫ জানুয়ারি থেকে পুনরায় একাধিক ডিম পাড়া শুরু করে মুরগিটি। বুধবার সর্বোচ্চ ১৩টি ডিম দেয়।
এমবিএ পাস করা আরিফ জানান, নেদারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণী বিদ্যায় পিএইচডি করছেন তার আত্মীয় সৈয়দ সায়েম উদ্দিন। মুরগিটির ছবি ও বৃত্তান্ত জানিয়ে তাকে ই-মেইলে করেন।
জবাবে সায়েম উদ্দিন তাকে জানিয়েছেন, মুরগিটির জেনেটিক কোনো সমস্যা থাকতে পারে। যে কারণে ডিম ধরে রাখতে পারছে না। যে কোনো সময় মুরগিটির মৃত্যু হতে পারে।
সরেজমিনে আরিফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি তার পোলট্রি ফার্মের জন্য গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় অলিপুরের সিপি হ্যাচারি থেকে এক দিন বয়সী ব্রাউন লেয়ার প্রজাতির দুই হাজার মুরগির বাচ্চা কেনেন। পাঁচ মাস বয়সে ডিম পাড়ার কথা থাকলেও মুরগীগুলো ছয় মাস বয়সে ডিম দিতে শুরু করে।
এর পর আরিফ যা বললেন তা গল্পের মতো শুনালেও সত্য ঘটনা। এক দিন তিনি লক্ষ্য করলেন তার খামারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠা একটি মুরগি মোরগের মতো আচরণ করছে। মাথার ঝুঁটিও মোরগের মতো। তাই মুরগিটি তিনি অন্য খাঁচায় আলাদা রাখেন।habiganj-news-home
এর পর গত বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মুরগিটি প্রতিদিন তিনটি করে ডিম দিতে থাকে। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে পুনরায় একাধিক ডিম দিতে শুরু করে মুরগিটি। ৩ কেজি ৭শ’ গ্রাম ওজনের এই মুরগিটি বুধবার সর্বোচ্চ ১৩টি ডিম দেয়।
আরিফ বলেন, ‘প্রথমে আমি নিজেও বিশ্বাস করেনি। এক দিন ভোরে নিজেই দূর থেকে লক্ষ্য করছি কিছু সময় পর পর মুরগিটির ডিম পাড়ার দৃশ্য। তার পর স্থানীয় মসজিদের ইমামসহ কয়েকজনকে এই অবিশ্বাস্যকাণ্ডটি দেখিয়েছি।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহবুবুল আলম  জানান, প্রাণীদেহে যে গ্র্যাল্ড থাকে তা থেকে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ হওয়ায় প্রজনন ইন্দ্রিয়ের কার্যক্রমতা বেড়ে যাওয়ায় হয়তো মুরগিটি মাত্রাতিরিক্ত ডিম দিচ্ছে।
তিনি জানান, খামারী যদি তার মুরগিটি পরীক্ষার জন্য দেন তাহলে এটিকে রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠিয়ে সহজে এর কারণ জানাতে পারব।
সরকারিভাবে বা দেশে কোনো প্রাণী গবেষক এর ওপর গবেষণা করতে চাইলে মুরগিটি দিতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন আরিফ।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend